প্রকাশিত: ১০:০১ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০২৫
সারাদিন ডেস্ক
কাশ্মীরেরে পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যখন তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে, ঠিক সেই মুহূর্তে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি শুক্রবার এই প্রস্তাব দেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত ও পাকিস্তানকে তাদের ‘ভাতৃপ্রতীম প্রতিবেশী’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে বহু শতাব্দীর পুরনো সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বিদ্যমান এবং ইরান এই সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।
আব্বাস আরাগচি আরও লেখেন, অন্যান্য প্রতিবেশীর মতোই ভারত ও পাকিস্তান ইরানের কাছে অগ্রাধিকার পায়। ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ইরানের দূতাবাস এই কঠিন সময়ে দুই দেশের মধ্যে বৃহত্তর বোঝাপড়া তৈরিতে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। পোস্টে পার্সিয়ান কবি সাদির একটি বিখ্যাত কবিতার পঙ্ক্তিও উদ্ধৃত করেন তিনি, যেখানে মানবজাতিকে একটি একক পরিবারের অংশ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং একজনের কষ্টে অন্যের ব্যথিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। এই ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানকে পরোক্ষভাবে দায়ী করে দেশটির সঙ্গে সিন্ধু নদের পানি চুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা সুবিধা বাতিল এবং প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধের ঘোষণা করে।
জবাবে পাকিস্তানও ভারতের বিমানের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় এবং ভারতীয়দের ভিসা সুবিধাও বাতিল করে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন ভারতের জলশক্তিমন্ত্রী সিন্ধু নদের পানি পাকিস্তানে যেতে না দেওয়ার ব্যবস্থা করার কথা জানান। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে, ভারত পানি প্রবাহ বন্ধের চেষ্টা করলে তারা এটিকে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হিসেবে বিবেচনা করবে এবং উপযুক্ত জবাব দেবে।
এই পরিস্থিতিতে ইরানের মধ্যস্থতার প্রস্তাব আন্তর্জাতিক মহলে ইতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে। তবে, এখন পর্যন্ত নয়া দিল্লি ও ইসলামাবাদ আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। দীর্ঘদিন ধরে চলা আসা বৈরী সম্পর্ক এবং সাম্প্রতিক কঠোর পদক্ষেপের কারণে এই মধ্যস্থতা কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা সময়ই বলবে। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে