প্রকাশিত: ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০২৫
সারাদিন ডেস্ক
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের আওয়ামী লীগে যোগদানের সিদ্ধান্তকে শুধু ভুল নয়, ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলেও মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শফিকুল আলম লেখেন, সাকিব আল হাসানের রাজনীতিতে প্রবেশের সিদ্ধান্ত স্বাভাবিকভাবে ভুল ছিল না। কারণ, প্রতিটি নাগরিকেরই রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হওয়ার ও রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়ে তোলার অধিকার রয়েছে। তবে মূল প্রশ্ন হলো— তিনি কার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করলেন?
তিনি আরও লেখেন, যখন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যা, গুম, নির্বিচার গ্রেফতার, বিচারবহির্ভূত হত্যা, পদ্ধতিগত দুর্নীতি ও ব্যাংক লুটের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে, তখন সাকিব একটি নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি শুধু একটি রাজনৈতিক পছন্দ নয়, বরং একটি নীরব সমর্থন এমন এক শাসনব্যবস্থার প্রতি, যা আন্তর্জাতিক তদন্তের অধীনে রয়েছে।
প্রেস সচিব বলেন, সাকিব জনমতের ভুল ব্যাখ্যা করেছেন, এবং তার সিদ্ধান্তের নৈতিক গুরুত্বকেও উপেক্ষা করেছেন। এটি হয় গভীর রাজনৈতিক সরলতা, অথবা আরও খারাপ কিছু— ব্যক্তিগত লাভের উদ্দেশ্যে পরিচালিত সুযোগবাদ। আর সবচেয়ে ভীতিকর বিষয় হলো তার নীরবতা।
তিনি দাবি করেন, ‘‘সাকিবের নিজ জেলা মাগুরায় বিরোধী দলের কর্মীদের গুলি করে হত্যা করা হলেও, তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দেখাননি। কোনও নিন্দা, বিচার দাবি কিংবা দুঃখপ্রকাশ করেননি। এই নীরবতা কেবল হতাশাজনক নয়, বরং ‘নির্লজ্জ বধিরতা’।’’
শফিকুল আরও লেখেন, সাকিব হয়তো দেশের সর্বকালের সেরা প্রতিভাবান ক্রিকেটার হতে পারেন, কিন্তু জাতীয় দলে পারফরম্যান্স দায়মুক্তি দেয় না।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, একদিন সাকিব জাতিসংঘের সেই ১২৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি পড়বেন, যেখানে তার দলের নেতৃত্বের অধীনে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
পোস্টের শেষাংশে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সাকিবের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সবচেয়ে যৌক্তিক ব্যাখ্যা হচ্ছে— লোভ। তার রাজনৈতিক পদক্ষেপ এবং বিতর্কিত ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা সেটিই নির্দেশ করে।
প্রেস সচিবের মন্তব্য অনুযায়ী, সাকিবের আওয়ামী লীগে যোগদান কেবল রাজনৈতিক ভুল ছিল না, বরং ছিল দেশের মানুষের প্রতি এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।