প্রকাশিত: ৫:১৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এক সরকারি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানায়।
ভারতের পরোক্ষ কর ও শুল্ক বিভাগ জানায়, ২০২০ সালের ২৯ জুন জারি করা সার্কুলারটি এখন থেকে আর কার্যকর থাকবে না। তবে ওই সার্কুলারের আওতায় ইতোমধ্যে ভারতে প্রবেশ করা পণ্যবাহী কার্গোগুলো নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে।
এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ থেকে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের মতো তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানি কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বাণিজ্য বিশ্লেষকরা।
ভারতের এই সিদ্ধান্ত এমন সময় এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে— ভারত ও বাংলাদেশ—বেশ কিছু দেশের বিরুদ্ধে নতুন করে উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে।
এর আগে ভারতের পোশাক শিল্পের রপ্তানিকারকরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন, যেন বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়।
ভারতের ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনস (FIEO)-এর মহাপরিচালক অজয় সাহাই বলেন, “এই সিদ্ধান্তের ফলে আমাদের নিজস্ব রপ্তানিকারকরা অতিরিক্ত কার্গো সক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবে। আগে বাংলাদেশি কার্গোর কারণে আমাদের বন্দরে স্থান সংকট হতো।”
ভারতের গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (GTRI)-এর প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব মনে করেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা লজিস্টিক বিলম্ব, উচ্চ ব্যয় এবং অনিশ্চয়তার মুখে পড়বেন।
তিনি বলেন, “ভারতের এই একতরফা সিদ্ধান্ত শুধু বাংলাদেশের নয়, ভূমিবেষ্টিত দেশ নেপাল ও ভুটানের সঙ্গেও বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। WTO-এর নিয়ম অনুযায়ী, ট্রানজিট সুবিধা বাধাহীন এবং শুল্কমুক্ত হতে হবে। ভারত ও বাংলাদেশ—দু’দেশই এই সংস্থার সদস্য।”
বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাত—পোশাক খাত। এই খাতের রপ্তানি কার্যক্রমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহারের সুযোগ থাকায় অনেক ক্ষেত্রে সময় ও খরচ কমানো সম্ভব হয়েছিল। এখন সেই সুযোগ বন্ধ হওয়ায় বিকল্প রুট ও নতুন পরিকল্পনার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক চাপের মধ্যেই ভারতের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা-কে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।