প্রকাশিত: ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
সারাদিন ডেস্ক
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে দুর্নীতি রোধ, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং ন্যায্য প্রতিযোগিতা প্রতিষ্ঠার জন্য ১২ দফা দাবি জানিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এসময় তারা সরকারের কাছে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরেন, যার মধ্যে আইসিটি খাতে দুর্নীতির তদন্ত ও বিচার, স্বচ্ছ স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ার দাবি, সরকারি সফটওয়্যার প্রকল্পগুলোতে সিন্ডিকেট বিলুপ্ত করার আহ্বান এবং পিপিআরএ পরিবর্তন করার দাবি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
অবস্থান কর্মসূচি শেষে ব্যবসায়ীরা আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরীর কাছে তাদের স্মারকলিপি জমা দেন। স্টেকহোল্ডাররা বলেছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে খাতে চলমান দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটের বিরুদ্ধে সরব, এবং এসব সমস্যা নিরসন না হলে বাংলাদেশের টেকসই ও স্বচ্ছ স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।
কর্মসূচি থেকে ১২ দফা দাবি তুলে ধরেন ব্যবসায়ীরা। সেগুলো হলো-
১. আইসিটি খাতে দুর্নীতির তদন্ত ও বিচার: গত ১৫ বছর ধরে আইসিটি খাতে হাজার কোটি টাকা পাচারের নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। দোষী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট কোম্পানি ও ব্যক্তিদের কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে।
২. স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম: আইসিটি খাতে ফ্যাসিস্ট মদতপুষ্ট কোম্পানি ও কর্মকর্তাদের প্রভাবমুক্ত একটি ব্যবসায়ীবান্ধব স্টার্টআপ ফাইন্যান্স ও ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে।
৩. সরকারি সফটওয়্যার কাজে সিন্ডিকেটের বিলুপ্তি: সরকারি সফটওয়্যার প্রকল্পগুলোতে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সিন্ডিকেট ব্যবস্থা বিলুপ্ত করতে হবে।
৪. পিপিআরএ পরিবর্তন: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সরকারি প্রকল্পের ক্রয় নীতিমালা সংশোধন করতে হবে।
৫. ফ্যাসিস্ট আশীর্বাদপুষ্ট কোম্পানিগুলোর কালো তালিকাভুক্তি: বিগত ১৫ বছরে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের অপব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করে কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে।
৬. দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ: আইসিটি খাতে দুর্নীতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক কমিটি গঠন করতে হবে। একই সঙ্গে দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে।
৭. বিতর্কিত ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের অপসারণ: আইসিটি খাতের নীতিনির্ধারণী ও প্রশাসনিক পর্যায়ে থাকা দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অপসারণ করতে হবে এবং তাদের স্থলে স্বচ্ছ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে।
৮. স্টার্টআপ বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সামি আহমেদ ও তার সহযোগীদের পদত্যাগ: স্টার্টআপ বাংলাদেশের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য এর বর্তমান ম্যানেজিং ডিরেক্টর সামি আহমেদ ও তার সহযোগীদের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে।
৯. আইসিটি সেবার অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের তদন্ত: আইসিটি সেবার নামে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১০. স্টার্টআপ ও এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য প্রকৃত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড: বড় করপোরেটদের একচেটিয়া সুবিধা দেওয়া বন্ধ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য সুযোগ তৈরি করতে হবে।
১১. সরকারি ও বেসরকারি স্টার্টআপ ফান্ডের স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ: স্টার্টআপ ও ইনোভেশন ফান্ডের বণ্টনে স্বচ্ছতা আনতে স্বাধীন নিরীক্ষা কমিটি গঠন করতে হবে।
১২. আইসিটি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি: আইসিটি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম এবং সরকারি প্রকল্পের সব তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।