প্রকাশিত: ৬:৫১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫
সারাদিন ডেস্ক
গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, সেই স্বপ্নকে সফল করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকের প্রারম্ভিক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি বলেন, ‘প্রতিজ্ঞা করি আমরা যেন গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি অসম্মান না জানাই। যে কারণে তারা আত্মত্যাগ করেছিল সেটা যেন পরবর্তী সব প্রজন্ম মনে রাখে, তাদের আত্মত্যাগ স্মরণ করে, তাদের আত্মত্যাগ সার্থক করার জন্য আমরা সবাই মিলে সবরকম চেষ্টা করবো তাদের সে স্বপ্ন যেন বাস্তবায়ন করতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি তারা এই ত্যাগ স্বীকার না করতেন, তবে আমাদের প্রশ্ন করারও সুযোগ থাকতো না। ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা সেই সুযোগ পেয়েছি।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ছয় মাস পার হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “প্রথম অধ্যায় ছিল প্রস্তুতির সময়। এখন দ্বিতীয় পর্বে প্রবেশ করলাম। আমাদের লক্ষ্য—একটি সুশৃঙ্খল দেশ গড়ে তোলা, যেখানে গণতান্ত্রিক ও আইনি কাঠামো মজবুত হবে এবং স্বৈরাচারী শাসনের কোনো সুযোগ থাকবে না।”
ড. ইউনূস দেশের আইনি কাঠামো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা ছোটখাটো একটা হাডুডু খেলার জন্য আইন বানাই। ফুটবল খেলা তো বটেই, এটা আন্তর্জাতিক খেলা। সে আইন আমরা মেনে চলি, মেনে চলি বলেই খেলাটা খেলা হয় তামাশা হয় না। আইনগুলো এমনভাবে বানানো হয়েছে সবাই যেন উপভোগ করে। কিন্তু আমরা আমাদের দেশকে তামাশায় পরিণত করে ফেলেছি। আইন বলে কিছু নেই, নিয়ম বলে কিছু নেই। যারা আত্মত্যাগ করেছে তারা আমাদের নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছে আমরা যেন সেসব আইনকানুন পাল্টে ফেলে নতুন বাংলাদেশের জন্য প্রস্তুত হই।
সভায় অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, “এই ঐকমত্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা একটি নতুন কাঠামো গড়ে তুলতে চাই, যেখানে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে।”
প্রথম পর্ব শেষ করে দ্বিতীয় পর্বে অন্তর্বর্তী সরকার কীভাবে দেশকে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক কাঠামোর দিকে এগিয়ে নিতে চায়, সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
রাজনৈতিক অঙ্গনে এ বক্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা কেমন হবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।