প্রকাশিত: ১:৫২ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় ডাকাতি চেষ্টার পেছনে হৃদয়বিদারক একটি উদ্দেশ্যের কথা উঠে এসেছে। পুলিশ জানায়, আটক তিনজন ডাকাত দাবি করেছেন, কিডনি রোগে আক্রান্ত মৃত্যুপথযাত্রী এক রোগীকে বাঁচানোর জন্য তারা এ কাজ করতে এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় এক ব্রিফিংয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আহম্মদ মুঈদ এ তথ্য জানান।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, আটককৃতদের মধ্যে একজনের বয়স ২২ এবং বাকি দুজনের বয়স ১৬। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা মুভি দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে এক ধরনের অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে এই ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। তাদের দাবি অনুযায়ী, কিডনি সমস্যায় ভুগতে থাকা একজন রোগীর চিকিৎসার অর্থ যোগাড় করতেই তারা ব্যাংকে ডাকাতি করতে এসেছিলেন।
এসপি আহম্মদ মুঈদ বলেন, “তারা যে রোগীর কথা উল্লেখ করেছেন, তার সত্যতা যাচাই-বাছাই চলছে। তাদের বক্তব্য পুরোপুরি নিশ্চিত করার আগে আমরা কিছু বলতে পারছি না। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তারা সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে এমন কাজ করেছেন।”
দুপুর ২টার দিকে ডাকাতরা ব্যাংকে ঢোকার পর পাশের মসজিদের মাইক থেকে বিষয়টি জানানো হয়। এতে এলাকাবাসী দ্রুত ব্যাংকটি ঘেরাও করে। ঘটনার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
আইজিপি (পুলিশ মহাপরিদর্শক) সরাসরি অভিযানের তদারকি করেন। তিনি নির্দেশ দেন, কোনো হতাহতের ঘটনা ছাড়াই অভিযান শেষ করতে হবে। এ জন্য পুলিশ দীর্ঘক্ষণ ধরে ডাকাতদের সঙ্গে কথা বলে এবং তাদের আত্মসমর্পণে রাজি করায়। এমনকি ডাকাতদের আইজিপির সঙ্গেও কথা বলিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, ডাকাতদের কাছে থাকা অস্ত্র আসলে খেলনা পিস্তল ছিল। তাদের দাবি অনুযায়ী বাইরে কোনো সহযোগী ছিল না। তবে নিজেদের ভয় দেখানোর কৌশল হিসেবে তারা বলেছিল যে বাইরে আরও সহযোগী রয়েছে।
ঘটনার পুরো তদন্ত এখনও চলমান। পুলিশ নিশ্চিত করতে চাইছে, ডাকাতদের দাবির পেছনে কোনো সত্যতা রয়েছে কি না। এসপি আহম্মদ মুঈদ বলেন, “তারা অপরাধী না কি শুধুই বিভ্রান্ত যুবক, তা তদন্তের পরই স্পষ্ট হবে।”
দুপুরের এই ঘটনায় ব্যাংকের ম্যানেজার এবং স্থানীয়দের দ্রুত প্রতিক্রিয়া ও পুলিশের তৎপরতায় বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো গেছে।