প্রকাশিত: ১১:৪৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৪
সারাদিন ডেস্ক
বিদ্রোহীদের আন্দোলনের মুখে দেশ ছাড়ার ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল না বলে দাবি করেছেন সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। গত ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ায় তার সরকারের পতনের পর সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) মস্কো থেকে প্রথমবারের মতো দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
বাশার আল-আসাদ বলেন, “সিরিয়া ত্যাগের বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত ছিল না। রুশ সামরিক বাহিনীর অনুরোধে তাকে একটি হামলার শিকার ঘাঁটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।” প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, “আমার প্রস্থান যুদ্ধের সমাপ্তি নয়, বরং পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য একটি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত।”
তিনি জানান, ৭ ডিসেম্বর রাতে দামেস্কে বিদ্রোহীরা প্রবেশ করলে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাত্রা ভয়াবহ রূপ নেয়। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিনি লাতাকিয়া প্রদেশে অবস্থিত রাশিয়ার হামিমিম ঘাঁটিতে যান। সেখানে থেকেই সামরিক কার্যক্রম তদারকি করছিলেন। পরদিন সন্ধ্যায় ড্রোন হামলার শিকার হওয়ায় রুশ বাহিনীর উদ্যোগে তাকে মস্কোতে সরিয়ে নেওয়া হয়।
বাশার আল-আসাদের দাবি, সিরিয়ায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ায় দেশটির সামরিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। বিশেষ করে ইসলামপন্থী বিদ্রোহীগোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে চালানো বিদ্যুৎগতির অভিযানে ৮ ডিসেম্বর তার সরকারের পতন ঘটে।
উল্লেখ্য, হায়াত তাহরির আল-শাম অতীতে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত আল-নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত ছিল। বিদ্রোহী বাহিনী দামেস্কে প্রবেশের পরপরই আসাদ তার দায়িত্ব লাতাকিয়ায় সরিয়ে নেন এবং সেখান থেকে রাশিয়ার সহযোগিতায় সিরিয়া ত্যাগ করেন।
বাশার আল-আসাদ বলেন, “যখন রাষ্ট্র সন্ত্রাসের কবলে পড়ে এবং কার্যকর ভূমিকা রাখার সক্ষমতা হারায়, তখন সেই রাষ্ট্রে কোনো অবস্থান অর্থহীন হয়ে যায়।”
তবে সিরিয়ার সাবেক সরকারি কর্মকর্তাদের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বিদ্রোহীদের রাজধানী দখলের কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই আসাদের দেশত্যাগের প্রস্তুতি ছিল।
বাশার আল-আসাদ ২০০০ সালে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসেন এবং প্রায় তিন দশক ধরে শক্ত হাতে সিরিয়া শাসন করেন। কিন্তু বিদ্রোহীদের তীব্র আন্দোলন ও সামরিক অভিযানের মুখে তার শাসনের অবসান ঘটে।
সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।