প্রকাশিত: ১১:১০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০২৪
বগুড়া সংবাদদাতা:
বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় গৃহবধূ উম্মে সালমা হত্যাকাণ্ডে পুলিশি তদন্তে নতুন মোড় দেখা দিয়েছে। র্যাবের দাবি ছিল, সালমার ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান মাকে হত্যা করেছেন। তবে পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন সালমাদের বাসার ভাড়াটিয়া মাবিয়া আক্তার ও তাঁর দুই সহযোগী সুমন চন্দ্র সরকার এবং মোসলেম উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিবরণ পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মোসলেম। অন্য দুই আসামিকেও রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মাবিয়া আক্তার সালমাদের বাসায় চার মাস ধরে ভাড়া থেকে মাদক ব্যবসা ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে তাঁকে বাসা ছাড়ার নোটিশ দেন সালমা। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে মাবিয়া সুমন ও মোসলেমকে নিয়ে সালমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
ঘটনার পেছনের কারণ
উম্মে সালমা ছিলেন দুপচাঁচিয়ার ডিএস কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের স্ত্রী। নিজের তৃতীয় তলার বাসায় ছোট ছেলে সাদকে নিয়ে থাকতেন। তাদের চারতলাবিশিষ্ট ভবনের দ্বিতীয় তলায় মাবিয়া আক্তার ভাড়াটিয়া হিসেবে ছিলেন।
পুলিশ জানায়, মাবিয়া বাসা ভাড়া নেওয়ার পর মাদক ব্যবসা এবং অনৈতিক কার্যকলাপ চালাতেন। বিষয়টি জানার পর সালমা তাকে বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেন এবং বকেয়া ভাড়ার বিষয়েও চাপ দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাবিয়া সুমন ও মোসলেমকে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
হত্যাকাণ্ডের বিবরণ
রবিবার সকালে মাবিয়া প্রথমে সালমার বাসায় প্রবেশ করেন। পরে সুমন ও মোসলেম এসে সালমাকে চেতনানাশক স্প্রে দিয়ে অচেতন করেন এবং শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যার পর তার নাক, মুখ ও হাত বেঁধে লাশ ডিপ ফ্রিজে রেখে পালিয়ে যান।
আলামত ও পুলিশের বক্তব্য
পুলিশ মাবিয়া ও তার সহযোগীদের দেওয়া তথ্যে হত্যায় ব্যবহৃত আলামত এবং বাসা থেকে খোয়া যাওয়া মালামাল উদ্ধার করেছে।
সাদের মুক্তির আশ্বাস
সালমা হত্যার ঘটনায় প্রথমে সাদকে গ্রেপ্তার করা হলেও নতুন তদন্তের ভিত্তিতে তাকে মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম। হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের মামলা সংশোধন করে যুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
এই ঘটনায় নতুন মোড় সৃষ্টি হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।