প্রকাশিত: ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪
সারাদিন ডেস্ক
সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে এ মামলায় আত্মসমর্পণ করতে আদালতে আসেন তিনি। এসময় তার পক্ষে আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করেন আইনজীবীরা।
তার অভিযোগ ছিল, মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দেয়া হয়েছে।
শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে তাকে কারাগারে ডিভিশন দেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
জানা গেছে, সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ ৫ জনের পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন— জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভুইয়া।
এর আগে পলাতক দেখিয়ে মাহমুদুর রহমানের অনুপস্থিতিতে এ মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেয় বিচারিক আদালত। দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকার পর গত শুক্রবার দেশে ফেরেন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত এই সম্পাদক।
এদিকে মাহমুদুর রহমানের আত্মসমর্পণকে ঘিরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আদালতের প্রধান গেটের বাইরে রয়েছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া আদালত ভবনের বাইরেও সর্তকতায় রয়েছেন সেনা ও পুলিশ সদস্যরা।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যে কোনো সময় থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন।
২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এদিকে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে তুরস্ক থেকে দেশে ফিরেন মাহমুদুর রহমান। দেশে ফিরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই আমলে আমার ৫ মাস কারাগারে থাকতে আপত্তি নেই। হ্যাঁ আমার বয়স হয়েছে, আমি বুড়ো হয়ে গেছি, কিন্তু জেলে থাকার মতো মানসিক এবং শারীরিক শক্তি এখনও আমার আছে। কাজেই আপনারা এটা নিয়ে একদম বিচলিত হবেন না। একদম উদ্বিগ্ন হবেন না। আইনকে তার রাস্তায় যেতে দিন। আমাকে আমার মতো করে লড়াই করতে দিন।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন গত ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিবাদি সরকারের বিরুদ্ধে আমি আমার মতো করে ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে লড়াই করে গেছি। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতো করে লড়াই করেছে, আর আমি লড়াই করেছি আমার মতো করে।’