প্রকাশিত: ৬:৩৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক:
পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক সহিংসতায় বাইরের ষড়যন্ত্র আছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। তিনি বলেন-সভায় সবাই বলেছেন তারা সম্প্রীতি চান। তারপরেও কেন ছন্দপতন হচ্ছে, সবাই বলছে ষড়যন্ত্র। সম্প্রীতি নষ্ট করতে বাইরে থেকে এই ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পাহাড়ে অশান্তির পেছনে জড়িতদের বের করতে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি করা হচ্ছে। প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
রাঙ্গামাটি সেনানিবাসে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও জাতিগোষ্ঠীর নেতা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
হাসান আরিফ বলেন, এর পেছনে কারা জড়িত সেটা বের করতে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি করা হচ্ছে। তাদের শক্ত হাতে দমন করা হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং এর সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে। কোনো অবস্থায় পরিস্থিতির অবনতি করা যাবে না। যারা চেষ্টা করবে তাদের হাত ভেঙে দেওয়া হবে।
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের জেরে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কিছু অংশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। রাঙ্গামাটিতে সংঘর্ষের ঘটনার পর পৌর এলাকায় শুক্রবার বেলা একটা থেকে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। আর খাগড়াছড়ির সদর উপজেলায় বেলা দুইটা থেকে ১৪৪ ধারার নোটিশ জারি করা হয়েছে।
দীঘিনালার পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের জের এদিন সকালে রাঙ্গামাটিতেও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে সংঘর্ষ, গাড়ি ভাঙচুর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে সংঘর্ষে তিন জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত ১৭ জন হাসাপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ চারজন। সংঘর্ষে জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল চাকমা (৩০) নামে তিন জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
খাগড়াছড়ির সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনার পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে আরেক পার্বত্য শহর রাঙ্গামাটিতেও। এতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। এদিকে তিন পার্বত্য জেলায় বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা অবরোধ চলছে। ঢাকায় এক সমাবেশ থেকে এই অবরোধ ডাকা হয়। বিবৃতি দিয়ে তাতে সমর্থন জানিয়েছে আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শনিবার ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটি যান তিন উপদেষ্টা। সেখান থেকে খাগড়াছড়ি যান তারা।
এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, সেনাবাহিনীর চট্টগ্রামের জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাইনুর রহমান, বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়দের মধ্যে বিএনপি, জনসংহতি সমিতি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমিতি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা নিজেদের বক্তব্য ও পরামর্শ তুলে ধরেন।