প্রকাশিত: ৪:২২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৮, ২০২৪
সারাদিন ডেস্ক
ব্যাংক খাতের নানা অনিয়ম ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত এস আলম গ্রুপ। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এস আলম গ্রুপ ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সব ব্যাংকের লেনদেন ঋণ স্থগিত করেছে। এখন প্রতিষ্ঠানটি নামে-বেনামে থাকা বিভিন্ন জমি-সম্পদ বিক্রি করার চেষ্টা করছে। এগুলো ঠেকাতে আইনি প্রক্রিয়া দরকার। তাই রাষ্ট্রীয় স্বার্থে এ মুহূর্তে এস আলম গ্রুপের জমি ও সম্পদ না কেনার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন- এস আলম বিশ্বের ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তি যে, পরিকল্পিতভাবে ব্যাংক লুট করেছে। এভাবে পৃথিবীতে কেউ ব্যাংক ডাকাতি করেছে কি-না জানা নেই। এখন তার নামে–বেনামে থাকা সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীর অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। ফলে এ মুহুর্তে এস আলমের সম্পদ যেন কেউ না কেনে।
বুধবার (২৮ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এ পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, আমরা এ সম্পদকে আমানতকারীদের সুরক্ষায় ব্যবহার করতে চাই। এ বিষয়ে দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গভর্নর বলেন, এ সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। গ্রাহকদের বলব, ধৈর্য ধরেন। একবারে সবাই টাকা তুলতে যাবেন না। তাহলে ব্যাংক টাকা দিতে পারবে না। অনেকে অতিরিক্ত সুদের লোভে টাকা ব্যাংকে রেখেছেন। এখন অধৈর্য হলে হবে না। আমানতের টাকা লস হবে এটা আমরা চাই না। তবে আমরা ছাপিয়ে আর কোনো টাকা দেব না। কারণ সেটা জাতির জন্য ভালো হবে না। তখন মূল্যস্ফীতি ১০০ শতাংশ হয়ে যাবে। যেটুকু টাকা না তুললে নয়, সেটা তোলেন। আগামী ৫–৬ মাসের মধ্যে অবস্থা পরিবর্তন হবে। বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত কোনো আমানতকারীর টাকা খোয়া যায়নি।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ডলারের দর যেহেতু একটা স্থিতিশীল পর্যায় আছে, এমন পর্যায় থাকলে আগামী ৬-৭ মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। বন্যা যদিও একটু দুশ্চিন্তা তৈরি করেছে। তবে এটাও দ্রুত ঠিক হয়ে আসবে বলে আশা করা যায়। তিনি আরও বলেন, রিজার্ভ থেকে এখন ডলার বিক্রি করা হচ্ছে না। তাই রিজার্ভ কমার আশঙ্কা নেই। সরকারের চাহিদা আন্তঃব্যাংক বাজার থেকে মেটানো হচ্ছে।
এস আলম ছাড়া ব্যাংক খাতে আরও যেসব মাফিয়া রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ বিষয়ে জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, অন্যদের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হবে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এর আগে বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম, তার ছয় ভাই, স্ত্রী ও দুই ছেলেসহ পরিবারের বেশ কয়েকজনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ। একই সঙ্গে তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাব এবং অন্যান্য তথ্যও চাওয়া হয়েছে।