প্রকাশিত: ১১:৪২ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২৪
সারাদিন ডেস্ক
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলার ভোট মঙ্গলবার (২১ মে) অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় তা শেষ হয়। ভোট গণনা শেষে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বেসরকারি ফলাফল আসতে শুরু করেছে।
প্রথম ধাপের পর দ্বিতীয় ধাপেও ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। বিকেলে ব্রিফিংয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন, ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যাটি আগামীকাল পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন যারা
নারায়ণগঞ্জ: জেলার আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সাইফুল ইসলাম স্বপন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে এক লাখ ১৫ হাজার ২৫২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আনারস প্রতীক নিয়ে কাজী সুজন ইকবাল পেয়েছেন এক হাজার ৯৯৭ ভোট।
ফরিদপুর: জেলার দুটি উপজেলায় আজ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে নগরকান্দা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহসম্পাদক কাজী শাহ জামান বাবুল। আর সালথা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বর বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
রাজশাহী: দ্বিতীয় ধাপে রাজশাহীর তিন উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলাগুলো হলো বাগমারা, পুঠিয়া ও দুর্গাপুর। বাগমারা উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাকিরুল ইসলাম সান্টু (ঘোড়া), পুঠিয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সামাদ (আনারস) ও দুর্গাপুর উপজেলায় শরিফুজ্জামান শরীফ (মোটরসাইকেল) বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
রংপুর: রংপুরের দুটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে মিঠাপুকুরে ৭০ হাজার ৮৮২ ভোট পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান (হেলিকপ্টার) চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। আর পীরগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য নুর মোহাম্মদ মন্ডল (আনারস) চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন ৪৫ হাজার ৬৪০ ভোট পেয়ে। এনিয়ে তিনি তৃতীয় বারের মতো নির্বাচিত হলেন।
লালমনিরহাট: জেলার কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলায় আজ ভোট হয়। এর মধ্যে আদিতমারী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ফারুক ইমরুল কায়েস ও কালীগঞ্জ উপজেলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ বিজয়ী হয়েছেন।
নীলফামারী: বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা রিয়াদ আরফান সরকার (রানা) দোয়াত-কলম প্রতীকে ৩২ হাজার ৩৬৬ ভোট পেয়ে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
দিনাজপুর: দ্বিতীয় ধাপে জেলার চারটি উপজেলায় ভোট হয়। সেগুলো হলো- বিরল, বোচাগঞ্জ, বীরগঞ্জ ও কাহারোল। এর মধ্যে বিরলে জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম মোস্তাফিজুর রহমান (আনারস), বোচাগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আফছার আলী (ঘোড়া), বীরগঞ্জে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবু হুসাইন বিপু (আনারস), কাহারোলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম ফারুক (দোয়াত-কলম) বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
বগুড়া: জেলার তিনটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। আদমদীঘি উপজেলায় পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম খান রাজু। দুপচাঁচিয়ায় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আহম্মেদুর রহমান বিপ্লব মোটরসাইকেল প্রতীকে ৩৭ হাজার ৭৩২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আর কাহালুতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আল হাসিবুল হাসান কবিরাজ সুরুজ পুনরায় আনারস প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন।
জয়পুরহাট: দুটি উপজেলায় ভোট হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলায় মো. হাসানুজ্জামান মিঠু মোটরসাইকেল প্রতীকে ৪৪ হাজার ৪৭৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আর পাঁচবিবি উপজেলায় বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেকুন নাহার। তিনি ঘোড়া প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৩৮ হাজার ৩৯টি।
কক্সবাজার: জেলার চকরিয়া, পেকুয়া ও ঈদগাঁও উপজেলায় মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। চকরিয়ায় বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল করিম সাঈদী দোয়াত-কলম প্রতীকে ৫৬ হাজার ১২২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী জাফর আলম পেয়েছেন ৫২ হাজার ২৫২ ভোট। পেকুয়ায় দুইবারের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৩ হাজার ২৯৩ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রুমানা আকতার আনাসর প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৬ হাজার ৫৩৪ ভোট। আর নবগঠিত ঈদগাঁওয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি টেলিফোন প্রতীকে পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৫৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সামসুল আলম মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১২ হাজার ৯০৭ ভোট।
কুমিল্লা: জেলার দুটি উপজেলায় নির্বাচন হয়। উপজেলা দুটি হলো সদর দক্ষিণ ও বরুড়া। সদর দক্ষিণে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাবলু। আর বরুড়ায় প্রথমবারের মতো আনারস প্রতীক নিয়ে হামিদ লতিফ ভূঁইয়া বিজয়ী হয়েছেন। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের শ্যালক বলে জানা গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: জেলার দুটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ হয়। এর মধ্যে কসবায় ছাইদুর রহমান স্বপন এবং আখাউড়ায় মনির হোসেন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ছাইদুর রহমান স্বপন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই ও কুটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক। আর মনির হোসেন আখাউড়া উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক।
বান্দরবান: জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোটরসাইকেল প্রতীকে ১৫ হাজার ১৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন তোফাইল আহামদ। আর লামা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বেসরকারি ফলাফলে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. মোস্তফা জামাল দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়েছেন।
রাঙ্গামাটি: দ্বিতীয় ধাপে পার্বত্য এই জেলার তিনটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে কাপ্তাই উপজেলায় মো. নাসির উদ্দিন, রাজস্থলী উপজেলায় উবাচ মারমা এবং বিলাইছড়ি উপজেলায় বিরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
কুষ্টিয়া: জেলার চারটি উপজেলায় আজ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে কুমারখালী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খান আবারো বিজয়ী হয়েছেন। মিরপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম বিজয়ী হয়েছেন। দৌলতপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরী বিজয়ী হয়েছেন। আর ভেড়ামারা উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ভেড়ামারা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু হেনা মোস্তফা কামাল মুকুল।
যশোর: যশোরের চৌগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম হাবিবুর রহমান। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৫৬৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান পেয়ছেন ২৮ হাজার ৯৮০ ভোট।
মাগুরা: জেলার দুটি উপজেলা পরিষদে ভোট হয়। এর মধ্যে মহম্মদপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান এবং শালিখা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট শ্যামল কুমার দে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
বাগেরহাট: জেলার ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও চিতলমারী উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ফকিরহাট উপজেলায় শেখ ওহিদুজ্জামান বাবু, চিতলমারী উপজেলা আলমগীর হোসেন সিদ্দিকী এবং মোল্লাহাট উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহিনুর আলম ছানা বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
চাঁদপুর: জেলার তিনটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অ্যাডভোকেট হুমায়ন কবির সুমন। হাজীগঞ্জ উপজেলায় বিজয়ী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হেলালউদ্দিন। আর শাহরাস্তিতে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মুকবুল হোসেন।
ঝালকাঠি: জেলা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকে ৩৩ হাজার ৯৪৩ ভোট পেয়ে খান আরিফুর রহমান বিজয়ী হয়েছেন। নলছিটি উপজেলায় সালাহউদ্দিন খান সেলিম বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাডভোকেট জিকে মোস্তাফিজুর রহমান।
পিরোজপুর: পিরোজপুরে দুটি উপজেলায় নির্বাচন হয়। এর মধ্যে নেছারাবাদ উপজেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হক আনারস প্রতীক নিয়ে ৩৮ হাজার ৬১২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। আর কাউখালি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মো. আবু সাঈদ মিঞা ১১ হাজার ২৮৪ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
সুনামগঞ্জ: জেলার চারটি উপজেলায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বিজয়ী হয়েছেন। তাহিরপুরে যুবলীগ নেতা আফতাব উদ্দিন আনারস প্রতীকে ৩৬ হাজার ৫১৫ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। জামালগঞ্জে ২৯ হাজার ১১১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম শামীম। ধর্মপাশায় উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা শামীম আহমদ মুরাদ ১৮ হাজার ৮৮৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আর বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম তালুকদার।
প্রসঙ্গত- বিএনপিসহ বড় কয়েকটি দল ভোট বর্জন করায় শুরু থেকেই উপজেলা নির্বাচন নিয়ে মানুষের আগ্রহ ছিল কম। ভোটেও সেটার প্রতিফলন লক্ষ্য করা গেছে। বেশির ভাগ স্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে বেশ কিছু স্থানে বিএনপি নেতারাও নির্বাচন করছেন। তবে তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের ভোট চলাকালে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও বড় কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।