প্রকাশিত: ৪:৪৯ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০২৪
সারাদিন ডেস্ক
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মোহাম্মদ মোখবারের নাম সোমবার (২০মে) অনুমোদন করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি দুই মাস এ দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্য দিয়ে পরবর্তী সময়েও দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার পথ সুগম হলো তার। এ ছাড়াও দেশটির নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আলি বাঘেরি কানি।
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুর পর তার জায়গায় আলী বাঘেরি কানিকে নিয়োগ দিয়েছে দেশটির মন্ত্রিসভা। আলী বাঘেরি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৭ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি সেক্রেটারি ছিলেন।
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুর পর মন্ত্রণালয়েরর দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করে দেশটির মন্ত্রিসভা। নির্বাহী, সংসদ ও বিচার—সরকারের তিন বিভাগের এক বৈঠকের পর ঘোষণাটি আসে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে দেশজুড়ে পাঁচ দিনের শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
২০২১ সালের নির্বাচনে রাইসি ক্ষমতায় আসার পর মোখবারকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ৬৮ বছর বয়সী এই কূটনীতিক সর্বোচ্চ নেতা খামেনির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ২০১০ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মোখবারকে পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্রসংক্রান্ত তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। এ ছাড়া সেতাদ নামে একটি বিনিয়োগ তহবিলের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন সরবরাহ করার চুক্তি করতে মোখবার গত অক্টোবরে রাশিয়া সফর করেন।
ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মারা গেলে বা কোনো কারণে দায়িত্ব পালনে সক্ষম না হলে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে এবং নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে হবে। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলাবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
এর আগে, রোববার (১৯ মে) আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। দীর্ঘসময় অভিযান চালিয়ে হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় উদ্ধারকারীরা। এরপর হেলিকপ্টারে থাকা কোনো আরোহী জীবিত নেই বলে নিশ্চিত করা হয়।
হেলিকপ্টারটিতে রাইসি ছাড়াও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতি, পূর্ব আজারবাইজানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলি আলে-হাশেম ও প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রধান মেহেদি মুসাভি ছিলেন।
উল্লেখ্য, ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তিন বছর আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে ইব্রাহিম রাইসিকে মনে করা হয় একদিন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির উত্তরসূরি হবেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে দেশটির প্রধান বিচারপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সূত্র : বিবিসি