প্রকাশিত: ৪:০৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চাল ও তেলের দাম বৃদ্ধিতে অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেয়ার চেষ্ট করছে জানিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী। তিনি বলেন, আমরা সীমিত জনশক্তি নিয়ে এটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।
বৃহস্পতিবার (০৯ নভেম্বর) সকালে দেশব্যাপী এক কোটি স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ ও চালসহ টিসিবি পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম-২০২৩ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভোজ্য তেলের ব্যাপারে আমরা অবজার্ভ করছি, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বেড়ে গেছে। সেজন্যই দামের প্রভাবটা আমাদের দেশে পড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা বারবার তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কী পরিমাণ বাড়ছে এবং দেশের বাজারে কী পরিমাণ বাড়ছে, সেটা খেয়াল করা হচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আলু কোল্ড স্টোরেজে আছে। এটা ঠিক ব্যবসায়ীরা কিছুটা সুযোগ নিচ্ছেন। এখানে কিছু তথ্য সংক্রান্ত ব্যাপার পরিষ্কার হওয়া দরকার। আমাদের কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, এক কোটি ৭-৮ লাখ মেট্রিক টন আলু আমাদের দেশে উৎপাদিত হয়। আর আমরা ভোগ করি ৭০-৭৫ লাখ মেট্রিক টন। তাহলে ২৭ লাখ মেট্রিক টন আলু উদ্বৃত্ত থাকার কথা। কিন্তু আমরা এই হিসাবটি সঠিক বলে দেখছি না। আজকে আমরা সব কোল্ড স্টোরেজ হিসাব করে দেখেছি, এক কেজি আলুও আমদানি হয়নি। তাহলে কোথাও ভুল রয়েছে। হয় উৎপাদনের পরিসংখ্যানে ভুল আছে, অথবা চাহিদাতে ভুল আছে। এই ভুলের কারণে সুযোগ নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। তারা আজকে কোল্ড স্টোরেজে পণ্য রেখেছেন। সেই পণ্যের ওপর দাম বাড়িয়ে দিয়ে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছেন। আমরা সেটি নিরসন করার চেষ্টা করছি এবং পাশাপাশি আলু আমদানির ব্যবস্থা করেছি।
টিপু মুনশী আরও বলেন, যেটা আমাদের আমদানি করে চলতে হয়, সেটার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর ভরসা করতেই হবে। কিন্তু এই সুযোগটা নিয়ে কেউ যেন অতিরিক্ত লাভবান না হতে পারে, সেটা আমরা দেখভাল করব।
চালের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যথেষ্ট মজুত না থাকায় দেশে চালের দাম বেড়েছে। সরকার খুব শক্ত একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা আমদানি করব। যদিও এটি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়, তারপরও আমি যতদূর জানি তারা আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০ হাজার টন করে তিনটি কনসাইনমেন্টের এলসি ওপেন করে দিয়েছে, আরও দুইটি ওপেন করবে।
তিনি বলেন, সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আমি মনে করি সেক্ষেত্রে চালের দামটা কমবে। ধানের দাম কমেছে ১০০ টাকা। চালের দাম ৮০-৯০ টাকা কমেছে। গতকাল খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি- তিনি আমাকে এ তথ্য জানিয়েছেন। সবদিক থেকেই সরকার চেষ্টা করছে।
নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ৭ জানুয়ারি সারাদেশে বিএনপির কর্মসূচি বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, চাল-ডালের দাম বেড়েছে, কিন্তু অনেক পণ্যের দাম কমেও গেছে। শাক-সবজি, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আছে। পেঁয়াজের দামও কমে আসছে। বিএনপি মূলত বাজারে নিত্যপণ্যের দাম যত বেশি বেড়েছে, তার চেয়ে একটা পলিটিক্যাল প্রোগ্রাম দেয়ার জন্যই তারা দিয়েছে। আমরা সেটা লক্ষ করছি। পলিটিক্যাল পার্টি তো পলিটাক্যাল প্রোগ্রাম দেবেই।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
এসময় টিসিবির চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মামুন রশিদ শুভ্র উপস্থিত ছিলেন।