প্রকাশিত: ৯:০২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২, ২০২৩
তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:
কুমিল্লার লালমাইয়ে ‘নলেজ পার্ক’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
আজ (শনিবার) এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই নলেজ পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বিশ্বে এক সময় বাংলাদেশকে খুঁজে পাওয়া যেত না। জননেত্রী শেখ হাসিনার ১৪ বছরের আমলে দেশ এখন অর্থনীতিতে ২৫তম স্থান অর্জন করছে। এ নলেজ পার্কের মাধ্যমে সমগ্র কুমিল্লার ছেলে-মেয়েরা প্রযুক্তির ক্ষেত্র এগিয়ে যাবে। আমরা সবাই মিলে কুমিল্লাকে এগিয়ে নেবো।
আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘কুমিল্লার অনেক সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন। এই তরুণ-তরুনীদেরকে যদি আমরা আমরা আইটিতে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি তাহলে এই অঞ্চলের অর্থনীতির ইকোসিস্টেমে আমূল পরিবর্তন আসবে। তিনি বলেন, ১৫ বছর আগেও দেশের স্বল্প শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম কর্মসংস্থানের জন্য যেখানে গার্মেন্টসসহ অন্যান্য শ্রমনির্ভর শিল্পের উপর নির্ভরশীল ছিলো সেখানে বর্তমানে তারা আইটি শিল্পে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলছে। এছাড়া স্টার্টআপ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশের হার বাড়ানো এবং জেন্ডার ইনক্লুসিভ এন্টারপ্রেনারশিপ তৈরিতে এই নলেজ পার্ক সরাসরি ভূমিকা রাখবে। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ হবে বিশ্বের অন্যতম আইটি হাব। বাংলাদেশ থেকেই পরিচালিত হবে বিশ্বের অনেক জায়ান্ট কোম্পানি। সেগুলোর পরিচালনায় নেতৃত্ব দেবে আমাদের নতুন প্রজন্মের সন্তানেরা। সেই সময়ের উদ্ভাবনী মেধাসম্পন্ন তরুণ-তরুণীর মেধার বিকাশ ঘটবে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর, ইনোভেশন হাব-এর মতো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। শীঘ্রই এই পার্কের পাশে ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার’ এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এখানে যে দক্ষ জনবল সৃষ্টি হবে তারাই আবার এই নলেজ পার্কে কাজ করবে। তখন এই পার্কের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ মানবসম্পদ পেতে সমস্যা হবে না।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) জি এস এম জাফরউল্লাহ্ বলেন, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর মাধ্যমে বর্তমানে সারা দেশে সরাকারি উদ্যোগে ৯২টি হাই-টেক পার্ক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক/আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে, ইতোমধ্যে ১১টি পার্ক স্থাপনের কাজ সমাপ্ত হয়েছে যেখানে ইতোমধ্যে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে গঠিত হয়েছে আরো ১৭টি পার্ক। ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের প্রতিযোগিতা মোকাবেলায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইওটি, রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটির উচ্চপ্রযুক্তির ৩৩টি বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হচ্ছে।
প্রকল্প পরিচালক এ, কে, এ, এম, ফজলুল হক জানান, প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুমিল্লা জেলার লালমাই উপজেলার দত্তপুর মৌজায় ৭.৮৮ একর জায়গায় এই ‘নলেজ পার্ক’ স্থাপনের কাজ শেষ হলে এখানে প্রায় ১০০০ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর ৩০০০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।