প্রকাশিত: ১০:০৫ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০২৩
সারাদিন ডেস্ক
দেশব্যাপী বিরোধী দলের চলমান আন্দোলন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে তৃণমূলের নেতাদের নিয়ে বর্ধিত সভা ডেকেছে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এই বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নির্বাচিত নেতাদের সরকারবিরোধী আন্দোলন মোকাবিলা, গৃহদাহ নিরসন ও নির্বাচনী প্রস্তুতির নির্দেশ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য ইতোমধ্যে দলের তৃণমূলের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার নেতা রাজধানীতে পৌঁছেছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এই বৈঠককে দলীয়ভাবে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
রোববার (৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এই বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে।
দলের সভাপতিমণ্ডলীর কয়েকজন সদস্য বলেছেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা প্রায় পাঁচ বছর পর অনুষ্ঠেয় দলের বিশেষ বর্ধিত সভায় যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনা নেবেন। এরপর থেকেই নির্বাচনযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে দলীয় প্রস্তুতিকে আরও জোরদার করে তোলা হবে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি সভায় অংশ নেবেন জেলা/মহানগর ও উপজেলা/থানা/পৌর (জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা) আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা, দল-সমর্থিত সংসদের দলীয় সদস্য, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের দলীয় চেয়ারম্যানরা, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দলীয় মেয়ররা এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এক দফার আন্দোলন করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। আওয়ামী লীগ বলছে, শেখ হাসিনার অধীনেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃত্বে এটি প্রথম বর্ধিত সভা। এর আগে দলের সর্বশেষ বিশেষ বর্ধিত সভা হয়েছিল ২০১৮ সালের ২৩ জুন। সেদিন দলের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও নবনির্মিত কেন্দ্রীয় কার্যালয় উদ্বোধন উপলক্ষে তৃণমূল নেতাদের ঢাকায় ডেকেছিলেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৯ সালের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে নির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বে বর্ধিত সভা হতে পারেনি। কেননা ওই কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। পরে করোনা সংকটের কারণে প্রায় দুই বছর ধরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতাও চলেছে। ফলে আজকের বিশেষ বর্ধিত সভার মাধ্যমে প্রায় পাঁচ বছর পর দলীয় ফোরামের বড় কোনো সভায় একসঙ্গে তৃণমূল নেতাদের জড়ো হওয়ার সুযোগ মিলছে। যদিও সম্প্রতি দলের কয়েকটি জেলা-উপজেলা ও মহানগর নেতাদের গণভবনে ডেকে আলাদাভাবে মতবিনিময় করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিশেষ বর্ধিত সভা উপলক্ষে ঢাকা মহানগরের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডিএমপির নির্দেশনা অনুযায়ী গণভবনে অনুষ্ঠেয় বিশেষ বর্ধিত সভায় আমন্ত্রিত নেতারা বিজয় সরণি দিয়ে জাতীয় সংসদের লেক রোড হয়ে গণভবনের এক নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন। অংশগ্রহণকারীদের ব্যক্তিগত গাড়ি ডিএমপি পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র-সংলগ্ন মাঠে পার্ক করতে হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এই নির্দেশনা মেনে চলার জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এদিকে আগামী ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন দেখার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা।