প্রকাশিত: ৮:০৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০২৩
সারাদিন ডেস্ক
আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই সরকারের অধীনে দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দফা এক দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ।’। এই মহাসমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তিনি।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশে তিনি বলেন, ঢাকা শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখে শনিবার (২৯ জুলাই) অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। বেলা ১১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ ঘোষণা দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের এই মহাসমাবেশ পরিবর্তনের মাইলফলক। এখন বক্তব্য দেওয়ার সময় নেই, মাঠে আছি। এখন একটাই লক্ষ্য গণতন্ত্রের বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হবে। ভোটাধিকার হরণকারী কর্তৃত্ববাদী সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ও ইসি পুনর্গঠন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ এক দফা দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের দেশের মানুষ কষ্ট করে ডলার অর্জন করে রিজার্ভ বাড়ায়। আর এরা বিদেশে তা পাচার করে। এ সরকার মানবাধিকারের সরকার নয়। এরা অমানবিক সরকার।
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) বলেছিল ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে, কিন্তু এখন চালের দাম ৮০-৯০ টাকা। ঘরে ঘরে চাকরি দেবে, কিন্তু এখন ২০ লাখ টাকা ঘুস না দিলে চাকরি হয় না। আবার আওয়ামী লীগ না করলে চাকরি হয় না। আমাদের দেশের মানুষ কষ্ট করে ডলার অর্জন করে রিজার্ভ বাড়ায়। আর এরা বিদেশে তা পাচার করে। এ সরকার মানবাধিকারের সরকার নয়। এরা অমানবিক সরকার।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকের সমাবেশের পর থেকে শেখ হাসিনার সরকারে থাকার কোনো সুযোগ নেই। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গণভবন ত্যাগ করার প্রস্তুতি নিন।
তিনি বলেন, দখলদার, অবৈধ ও ভোট চোর সরকারকে বার্তা দিতে আজ দেশের মানুষ পল্টনে উপস্থিত হয়েছে। এই মহাসমাবেশের মাধ্যমে দেশের মানুষ পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে, গণভবন ত্যাগ করুন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের মহাসমাবেশ ঘিরে বহু নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত, তারা সবাই এই সরকারকে সহযোগিতা করেছে। তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।
দলটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, সরকার বাঘের পিঠে চড়ছে। তাই তারা পথ খুঁজে পাচ্ছে না। সরকারের বাঁচতে হলে খালেদা জিয়ার কাছে মাফ চাইতে হবে। না হলে বাঁচার কোনো পথ নেই।
তিনি বলেন, বিদেশিদের গণতন্ত্রের সবক আমাদের জন্য লজ্জার। দেশের এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের কোনো বিকল্প নেই।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে বিএনপির সমাবেশে জনস্রোত। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সমাবেশের চেয়ার খালি, সেখানে বাবুই ও চড়ুই পাখি ছাড়া কোনো লোক নেই।
তিনি বলেন, সব বাধা-জুলুম উপেক্ষা করে নয়াপল্টনের মহাসমাবেশে মানুষ উপস্থিত হয়েছে। সুতরাং আর কোনো বাধা আমাদের দমাতে পারবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা যে মানুষ হত্যা ও জুলুম করেছেন, সেটি আমেরিকার কংগ্রেস সদস্যরা বলেছেন। তারা আরও বলেছেন, জনগণের আন্দোলনের র্যাব-পুলিশ বাধা দিয়েছে, মানুষ হত্যা করেছে। কংগ্রেস সদস্যদের এ প্রতিবাদ আমাদের জন্য লজ্জার।
দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বর্তমান সরকারকে ধাক্কা মেরে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দিয়ে তারপর নির্বাচন করা হবে।
তিনি বলেন, একটু ধৈর্য ধরুন, আগামী দিনের কর্মসূচি মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় লক্ষ্যে পৌঁছে যাব। আমাদের কর্মসূচির কথা শুনলেই এ সরকারের মাথা খারাপ হয়ে যায়। আমাদের কর্মসূচির দিনেই তারা পাল্টা কর্মসূচি দেয়।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এরশাদকে পদত্যাগ করিয়ে নির্বাচনে গিয়েছিলেন। স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছিলেন। তার সন্তান তারেক রহমান বলেছেন এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে দেব না।
এর আগে, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ শুরু হয়।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, মহাসমাবেশের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে ডিএমপির ইতিবাচক ভূমিকার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আশা করি তারা বিএনপির মহাসমাবেশের নিরাপত্তা বিধানে যথাযথ সহযোগিতা করবেন। সমাবেশে আসার পথে জনগণ ও বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে কোনো প্রকার বাধা প্রদান করা হবে না।