প্রকাশিত: ৬:৪৩ অপরাহ্ণ, মে ৮, ২০২৩
শরীয়তপুর সংবাদদাতা
চলন্ত লঞ্চ থেকে পড়ে নয় ঘণ্টা মেঘনা নদীতে ভেসে থাকা জোহরা বেগম (৩৮) মারা গেছেন। লঞ্চ থেকে পড়ে যাওয়ার সময় তার বাঁ পা ভেঙে যাওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
সোমবার (০৮ মে) সকালে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জোহরা বেগম শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের পশ্চিম বিষকাটালি গ্রামের বাসিন্দা জহিরুল ইসলামের স্ত্রী। স্বামী-সন্তানের সাথে নারায়ণগঞ্জে থাকতেন তিনি। ঈদে গ্রামে বেড়াতে যান।
গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে ঠান্ডার বাজার এলাকায় মেঘনা নদীতে পড়ে যান জোহরা বেগম। ৯ ঘণ্টা নদীতে ভেসে থাকার পর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে একটি নৌকার জেলেরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। লঞ্চ থেকে পড়ে যাওয়ার সময় তার বাঁ পা ভেঙে হাড় বেরিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ঢাকায় নিয়ে যান স্বজনেরা। বৃহস্পতিবার রাতে তার অস্ত্রোপচার হয়।
জোহরার দেবর মাইদুল ইসলাম মৃধা বলেন, ভাবি চলন্ত লঞ্চ থেকে পড়ে বাঁচার জন্য ৯ ঘণ্টা মেঘনা নদীতে ভেসে ছিলেন। তখন বেঁচে ফিরলেও এখন আর বেঁচে নেই। চিকিৎসকেরা বলেছেন, রাতভর নদীতে থাকার কারণে তিনি ট্রমায় ছিলেন। পায়ে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।
পঙ্গু হাসপাতালে জোহরার সাথে থাকা মা নার্গিস বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা অনেক চেষ্টা করেছি জোহরাকে বাঁচানোর জন্য, কিন্তু পারলাম না। ওর দুই ছেলে ও এক মেয়ে মা-হারা হয়ে গেলো! আমি ওদের কী বলে সান্ত্বনা দেবো? সকালে ওষুধ খাওয়ানোর কিছুক্ষণ পরেই মাইয়াটা আমার মারা যায়!”
কুচাইপট্টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন গণমাধ্যমকে বলেন, জোহরা জীবন বাঁচাতে সাহসের সাথে ৯ ঘণ্টা মেঘনা নদীতে ভেসে ছিলেন। সবার সহযোগিতায় তার উন্নত চিকিৎসা চলছিল। তবে সেই চেষ্টা সফল হলো না। তিনি মারা গেলেন। তাকে গ্রামে দাফন করা হবে।
সারাদিন/০৮ মে/এমবি