কাশ্মীর ইস্যুতে বিশেষ অধিবেশনের দাবি খাড়গের, মোদিকে চিঠি কংগ্রেস সভাপতির
কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার পর দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন কংগ্রেস সভাপতি ও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। হামলার পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত বিশেষ সংসদ অধিবেশন আহ্বানের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআই জানিয়েছে, গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে নিরীহ পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পরপরই খাড়গে এ উদ্যোগ নেন।


চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘এই মুহূর্তে জাতীয় ঐক্য ও সংহতির প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। বিরোধী দলগুলোর বিশ্বাস, সংসদের উভয় কক্ষে একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকা হলে তা হবে জাতীয় সংকল্প ও প্রতিরোধের শক্তিশালী বার্তা। এই হামলা মোকাবিলায় আমাদের সম্মিলিত অবস্থান স্পষ্ট হবে।’
চিঠির বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ শেয়ার করেন কংগ্রেস নেতা এবং দলের যোগাযোগ শাখার প্রধান জয়রাম রমেশ।
পেহেলগাম হামলার পর কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল। ওই বৈঠকে কংগ্রেসের তরফে রাহুল গান্ধী বলেন, সরকারের যেকোনো পদক্ষেপে বিরোধীদের পূর্ণ সমর্থন থাকবে।
হামলার নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘কারগিল থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত এই হামলার বিরুদ্ধে শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এটি কেবল নিরীহ পর্যটকদের ওপর আক্রমণ নয়, বরং ভারতের আত্মার ওপর আঘাত।” তিনি আরও হুঁশিয়ারি দেন, “এই হামলায় যারা জড়িত, তারা এমন শাস্তি পাবে যা কল্পনারও বাইরে।’
পেহেলগাম হামলার জেরে জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন খাতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। রাজ্য সরকার ইতোমধ্যে ৪৮টি পর্যটন রিসোর্ট বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং আরও ৩৯টি কেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বার্তা সংস্থা পিটিআই’র হাতে থাকা সরকারি নথি অনুযায়ী, এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিতে।
কাশ্মীরের পর্যটন অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি। স্থানীয়দের জীবিকা প্রধানত পর্যটননির্ভর হওয়ায় এই সিদ্ধান্তে তাদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এক সপ্তাহ আগেও ভিড়ে পরিপূর্ণ পেহেলগাম এখন পর্যটকশূন্য। আয় কমে যাওয়ায় অনেকে চরম সংকটে পড়ার আশঙ্কা করছেন।
হামলার প্রতিবাদে স্থানীয়রাও বিক্ষোভ করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সংহতি জানিয়েছে। হামলার পর কাশ্মীরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, যার প্রভাব পড়ছে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও।