আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে ভুয়া প্রতিবেদন

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:০৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০২৫

ড. আসিফ নজরুল। ফাইল ছবি

ভারতের অনলাইন সংবাদমাধ্যম নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া সম্প্রতি একটি মিথ্যা ও দায়িত্বহীন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে বলা হয়, জম্মু-কাশ্মীরে হামলার পর তিনি লস্কর-ই-তৈয়বার শীর্ষ এক সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা, মানহানিকর ও বাস্তবতাবিবর্জিত’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এক বিবৃতিতে জানান, গত ২৪ এপ্রিল প্রকাশিত প্রতিবেদনে একাধিক অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, যা আইন উপদেষ্টার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগ্রামে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে লস্কর-ই-তৈয়বার এক নেতার সঙ্গে উপদেষ্টার বৈঠকের যে দাবি করা হয়েছে, তা পুরোপুরি কল্পনাপ্রসূত এবং বাস্তবতার সঙ্গে কোনো মিল নেই।

প্রতিবেদনে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে ভুলভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়। মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, হেফাজতে ইসলাম একটি ইসলামিক প্ল্যাটফর্ম, যারা দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় কাজ করে। এর নেতৃবৃন্দ কোনো নিষিদ্ধ বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।

ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে হেফাজতের প্রতিনিধি দলের বৈঠক প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, এটি ছিল একটি পূর্বনির্ধারিত দাপ্তরিক বৈঠক, যেখানে তারা তাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর বিষয়ে একটি তালিকা উপস্থাপন করেন। এই বৈঠক নিউজ অ্যারেনার প্রতিবেদন প্রকাশের অন্তত তিন দিন আগে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বৈঠক শেষে প্রতিনিধি দল উপদেষ্টার সঙ্গে ছবি তোলে, যা প্রথাসিদ্ধ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হেফাজতের নেতারা বর্তমানে সরকার গঠিত ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠা কমিশনের রাজনৈতিক সংলাপে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। পাশাপাশি, পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করে আসছেন, যা তাদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও প্রাসঙ্গিকতা প্রতিফলিত করে।

Nagad

এছাড়া, উপদেষ্টার সোশ্যাল মিডিয়া কার্যক্রম নিয়েও প্রতিবেদনে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি মন্ত্রণালয়ের। একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে বলা হয়, তিনি ভারতবিরোধী উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন। প্রকৃতপক্ষে, ওই পোস্টটি ছিল একজন ভারতীয় নাগরিকের, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা নিয়ে লেখা হয়। উপদেষ্টা হামলার নিন্দা জানিয়ে পোস্টটি শেয়ার করলেও, পরে বিভ্রান্তি এড়াতে সেটি নিজ উদ্যোগেই মুছে দেন।

বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়, আইন উপদেষ্টা পেহেলগ্রামের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এবং দোষীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন। মন্ত্রণালয় এ ধরনের ভিত্তিহীন, অসতর্ক ও অপেশাদার প্রতিবেদনের তীব্র সমালোচনা করে সকল সংবাদমাধ্যমকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছে।