‘বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই, কঠোর আন্দোলনের ডাক আসবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৫:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০২৫

কারিগরি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামছে না। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সন্তুষ্ট হতে পারেননি আন্দোলনরত ছাত্র প্রতিনিধিরা। বৈঠক শেষে তাঁরা কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম বলেন, ‘আমরা আজ অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে বসেছিলাম, কিন্তু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পাইনি। আজকের বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই। ফলে আমরা কঠোর কর্মসূচির দিকে যাচ্ছি। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন চলবে।’

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াছমিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে আন্দোলনরত কারিগরি ছাত্রদের ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।

বৈঠক শেষে ছাত্র প্রতিনিধি জোবায়ের পাটোয়ারী বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন আট মাস ধরে চলছে। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছি না, বরং বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি। সচিবালয়ে আসার পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি। আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। আজকের বৈঠকে যে অতিরিক্ত সচিব উপস্থিত ছিলেন, তিনি নিজেই জানতেন না যে শিক্ষা উপদেষ্টা আসার কথা ছিল। অযৌক্তিক আলোচনা করে শুধু সময় নষ্ট করা হয়েছে। আমরা দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলনে যেতে চাই না, দ্রুত সমাধান চাই।’

শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:

জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল।

Nagad

জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক) পদের জন্য ডিপ্লোমা প্রকৌশল ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করা।

কারিগরি সব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ।

বিভাগীয় শহরগুলোতে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন।

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি শিক্ষা চালু এবং ডিপ্লোমাধারীদের শিক্ষক পদে আবেদন নিশ্চিত করা।

প্রাইভেট সেক্টরে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সারাদেশের জেলাগুলোতেও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।

বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সাতরাস্তা মোড়ে যান কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শোয়াইব আহমাদ খান। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন এবং জানান, পদোন্নতিতে ‘ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের’ কোনো কোটা থাকবে না।

তবে এই আশ্বাসে সন্তুষ্ট হননি শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি করেন, ছয় দফা প্রতিটি দাবির বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা লিখিতভাবে জানাতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বাস্তবায়নের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ সারাদেশে রেলপথ অবরোধ এবং অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন শিক্ষার্থীরা। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের আশ্বাসে আপাতত কর্মসূচি শিথিল করে আলোচনায় বসেছেন তারা।