নির্বাচন নিয়ে ড. ইউনূসের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখতে চায় জামায়াত
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখতে চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে বাংলাদেশ সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দক্ষিণ ও সেন্ট্রাল এশিয়া ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল এন. চুলিক–এর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। তারা জানতে চেয়েছেন—বাংলাদেশে পরবর্তী নির্বাচন কবে এবং কীভাবে হবে। তারা আরও জানতে চেয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে সংস্কার চাচ্ছে, সেই সংস্কার কেমন হতে পারে এবং জামায়াত কী চাইছে।


তিনি আরও বলেন, আমরা যদি আগামীতে দেশের দায়িত্ব পাই, তাহলে আমাদের অর্থনৈতিক নীতি এবং পররাষ্ট্রনীতি কেমন হবে, সে বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে। আঞ্চলিক নানা বিষয়ে তারা আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমরা তাদের সঙ্গে সব বিষয়ে স্পষ্টভাবে আলোচনা করেছি।
বৈঠকে সংখ্যালঘু ইস্যু, নারী অধিকার ও শ্রমিক অধিকার নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান জামায়াত আমির। এ ছাড়া বাংলাদেশের জটিল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও অর্থনৈতিক চাপের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমেরিকার আরোপিত ৩৭ শতাংশ শুল্ক পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে জানানোর জন্য মার্কিন প্রতিনিধিকে জানিয়েছি।
নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে আমরা মনে করি, রমজানের আগেই নির্বাচন হলে ভালো হয়। জুনে বর্ষা, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিতে পারে, যার ফলে নির্বাচন পেছানোর আশঙ্কা থাকে।
তিনি বলেন, আমরা দেশে গণতন্ত্র চর্চা করতে চাই, যেমনটা আমাদের দলে চর্চা করি। এজন্য যা প্রয়োজন, তা আমরা করব।
আওয়ামী লীগের শাসনকাল প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জাতি এখনো ট্রমাটাইজড। অনেক আহত মানুষ হাসপাতালে পড়ে আছেন, শহীদদের পরিবার আজও কাঁদছেন। এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া জরুরি। তবে আমরা কোনো প্রতিহিংসামূলক নয়, সঠিক বিচার ও ন্যায্য শাস্তি চাই।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম নির্বাচনকে জীবন ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কেয়ারটেকার সরকারের ফর্মুলা দিয়ে। যা পরবর্তীতে সংবিধানে যুক্ত হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তা দলীয় স্বার্থে বাতিল করে দেয়। এখন গোটা জাতি আবার কেয়ারটেকার ব্যবস্থাই চাচ্ছে। আমরা আশা করি, এটি আবার সংবিধানে যুক্ত হবে।
ব্রিফিংকালে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন এবং আমিরের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।