পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের এবার রেলপথ ব্লকেড ও অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা
ছয় দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনের অংশ হিসেবে সারাদেশে রেলপথ ব্লকেড ও অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা মোড়ে দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি শেষে এ ঘোষণা দেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি জুবায়ের পাটোয়ারী।


তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে অসহযোগ আন্দোলনের পাশাপাশি দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে রেলপথ ব্লক করে দেওয়া হবে।
কর্মসূচির সময় ও স্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা জানান, বিস্তারিত তথ্য ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ’ নামের ফেসবুক পেজে জানানো হবে।
জুবায়ের পাটোয়ারী অভিযোগ করেন, বিচারহীনতা এবং হামলার প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় নেমেছি। অথচ আমাদের ভাইদের গুলি করা হয়েছে, রক্ত ঝরেছে। কোনো আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর এতটা দমন-পীড়ন আগে দেখা যায়নি।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটেও প্রিন্সিপালের নির্দেশে হামলা হয়েছে। আমরা দাবি করেছিলাম তাকে অপসারণের, কিন্তু সরকার তা করতে পারেনি। একজন প্রিন্সিপালকে সরাতে দিনভর সময় লাগলে সরকার কীভাবে দেশ চালাবে?
সারাদেশে সড়ক অবরোধ, প্রশাসনের আশ্বাস
বুধবার সকাল ১০টা থেকে তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলায়ও শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন।
বিকেলে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শোয়াইব আহমাদ খান ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি জানান, ‘ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর’ পদে কোনো কোটা থাকবে না।
তবে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, প্রতিটি বিষয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়নের নির্দিষ্ট সময়সূচি না পাওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম বলেন, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ৩০% কোটা থাকার যে কথা বলা হচ্ছে, তা সত্য নয়। আমাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—এই কোটা থাকবে না। অন্য দাবিগুলোও ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের পথে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা হয়তো সব কিছু ঠিকমতো বুঝছে না। কিন্তু যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়িত হলে দেশের কারিগরি শিক্ষা অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি:
১. জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০% কোটা বাতিল করতে হবে
২. শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে ডিপ্লোমা প্রকৌশল ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করতে হবে
৩. কারিগরি পদে শুধুমাত্র কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিতদের নিয়োগ দিতে হবে
৪. প্রতিটি বিভাগীয় শহরে কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে
৫. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি শিক্ষা চালু করতে হবে এবং ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের শিক্ষক হিসেবে আবেদনের সুযোগ দিতে হবে
৬. ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য প্রাইভেট সেক্টরে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করতে হবে