জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ: আলী রীয়াজ
রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হলেও এটি মূলত জনগণেরই দাবি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
শনিবার (১২ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বাংলাদেশ জাসদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।


আলী রীয়াজ বলেন, ‘কমিশন ও সরকার যৌথভাবে জনগণের এ দাবি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিয়েছে। কীভাবে এই সংস্কার কার্যকর করা যায়, তা নির্ধারণে আলোচনা চলছে। মে মাসের মধ্যভাগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করে দ্বিতীয় ধাপে এগোতে চায় কমিশন। এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের একটি সুনির্দিষ্ট পথ খুঁজে বের করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
সংলাপে বাংলাদেশ জাসদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানকে সমান গুরুত্ব দেওয়ার প্রস্তাবের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করা হয়েছে—এমন প্রস্তাব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে তারা মনে করে।
তারা আরও বলেন, সংবিধানের শুরুতে ‘রাষ্ট্রধর্ম’ এবং ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ রাখার বিষয়ে দলের অবস্থান রয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনে প্রার্থিতার বয়সসীমা কমানোর বিষয়েও তারা দ্বিমত পোষণ করেন।
সংলাপে ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন। জাসদের পক্ষে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান। সংলাপে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন প্রস্তাবনার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন।
এর আগে বিকেলে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জাকের পার্টির সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। দলটির মহাসচিব শামীম হায়দারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন ভাইস-চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, রাজনৈতিক উপদেষ্টা এজাজুর রসুল, অতিরিক্ত মহাসচিব মুরাদ হোসেন জামাল, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুন্নেছা জামান রেণু প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে কমিশন গঠন করা হয়। সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশ নিয়ে মতামত দিতে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে স্প্রেডশিট পাঠানো হয়।
এরইমধ্যে ৩২টি দল লিখিত মতামত জমা দিয়েছে। মতামতের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে এলডিপি, খেলাফত মজলিস, লেবার পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, এবি পার্টি ও নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেগুলোর বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি হিসেবে একটি ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করা হবে।