ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সন্‌জীদা খাতুন আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৫:৪৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৫, ২০২৫

বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গণের অন্যতম অগ্রদূত, বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ ও ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সন্‌জীদা খাতুন আর নেই। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

সন্‌জীদা খাতুনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার পুত্রবধূ ও ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা।

তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ছায়ানট। সংগঠনটির ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশিত শোকবার্তায় বলা হয়েছে—

“সংস্কৃতিকর্মী, শিল্পী, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও ছায়ানট সভাপতি সন্‌জীদা খাতুন-এর প্রয়াণে ছায়ানট গভীর শোক জ্ঞাপন করছে।”

জীবনী ও কর্মজীবন
১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন সন্‌জীদা খাতুন। তার বাবা ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেন এবং মা সাজেদা খাতুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক, ১৯৫৫ সালে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর, এবং ১৯৭৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

শিক্ষকতা দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হয় এবং তিনি দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেন।

Nagad

ছাত্রজীবন থেকেই সন্‌জীদা খাতুন সংস্কৃতি ও আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি সংগীত, আবৃত্তি, অভিনয় ও সাংগঠনিক কাজেও অংশ নেন। ১৯৬১ সালে ছায়ানট প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখেন এবং পরবর্তীতে এর সভাপতি হন।

সন্‌জীদা খাতুনের অবদানকে স্বীকৃতি জানিয়ে তাকে বহু পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত), দেশিকোত্তম পুরস্কার (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত), ১৯৮৮ সালে টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে ‘রবীন্দ্র তত্ত্বাচার্য’ উপাধি, ২০১৯ সালে ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার (‘নজরুল মানস’ প্রবন্ধ গ্রন্থের জন্য), ২০২১ সালে ভারত সরকার প্রদত্ত ‘পদ্মশ্রী’ সম্মাননা।

সন্‌জীদা খাতুনের শেষকৃত্য বিষয়ে তার পরিবার বা ছায়ানটের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গণে তার অনন্য অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।