বকেয়া বেতনের দাবিতে মিছিল, পুলিশের বাধায় সংঘর্ষ, আহত ৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৫:২০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৫, ২০২৫

বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে সচিবালয় অভিমুখে মিছিল নিয়ে যাওয়া গার্মেন্টস শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে প্রায় ৪০ জন শ্রমিক ও পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব ও সচিবালয়ের লিংক রোডের সামনে এই ঘটনা ঘটে। শ্রমিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তারা বেতন-বোনাস বকেয়া পাচ্ছেন না, কিন্তু মালিকপক্ষ প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও সমস্যার সমাধান করেনি।

টানা তিন দিন ধরে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন গার্মেন্ট শ্রমিকরা। সোমবার তারা নয়াপল্টনের সামনে সড়ক অবরোধ করলেও মঙ্গলবার সচিবালয়ের দিকে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হন।

বিজয়নগরের সামনে পুলিশ তাদের প্রথমে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও শ্রমিকরা সামনে এগিয়ে যান। পরে পল্টন পার হয়ে তোপখানা রোডে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ ফের বাধা দেয়, যা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

সকাল ১০টায় শ্রম ভবনের সামনে গার্মেন্ট শ্রমিকরা জড়ো হন এবং বেলা পৌনে ১১টায় সচিবালয়ের দিকে মিছিল নিয়ে এগোতে থাকেন। কিন্তু সোয়া ১১টায় তোপখানা রোডে পৌঁছালে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। শ্রমিকরা পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ বাধে।

সংঘর্ষ চলাকালে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কড়া অবস্থান নেয়। পরে শ্রমিকরা পুনরায় শ্রম ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন।

Nagad

গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ বলেন,আমাদের ৩০ থেকে ৩৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। পুলিশ বিনা উসকানিতে আমাদের ওপর চড়াও হয়েছে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, বেতন-বোনাস না পেলে ঈদের দিন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করা হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

এই আন্দোলনে টি এন জেড অ্যাপারেলস, অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেড, রোর ফ্যাশন, স্টাইল ক্রাফট গার্মেন্টস ও ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেডের কয়েকশ শ্রমিক অংশ নেন।

শাহবাগ থানার পরিদর্শক সরদার বুলবুল আহমেদ জানান, শ্রমিকদের হামলায় আমাদের পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে ফজলে রাব্বি গুরুতর আহত হয়েছেন।

শাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মনসুর বলেন, শ্রমিকরা পুলিশের ব্যারিকেড অতিক্রম করতে চেয়েছিল, কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী বাধা দেওয়া হয়। এরপর তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। অল্প সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।