সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব: একটি প্রতিষ্ঠান একটি গণমাধ্যমের মালিক হতে পারবে
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। শনিবার (২২ মার্চ) যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রতিবেদন জমা দেন।
প্রতিবেদন জমা হওয়ার পর ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন মিশন প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ। তিনি জানান, কমিশন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দিয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো—একটি প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র একটি গণমাধ্যমের মালিক হতে পারবে। এ ছাড়া বাসসকে জাতীয় সম্প্রচার সংস্থার সাথে একীভূত করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।


গণমাধ্যম সংস্কারের মূল প্রস্তাবনা:
১. ওয়ান হাউস ওয়ান মিডিয়া নীতি:এক প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র একটি গণমাধ্যমের মালিক হতে পারবে।
গণমাধ্যমের মালিকানায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।
২. জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা:
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারকে স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে।
উভয় প্রতিষ্ঠানকে একীভূত করে জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা গঠন করতে হবে।
৩. সাংবাদিকতার বেতন কাঠামো ও ন্যূনতম যোগ্যতা:
বিসিএস ক্যাডারদের এন্ট্রি ৯ম গ্রেডের বেতনের সমান সাংবাদিকদের শুরুর বেতন নির্ধারণের সুপারিশ।
ঢাকার জন্য ‘ঢাকা ভাতা’ প্রবর্তনের প্রস্তাব।
সাংবাদিকদের জন্য ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করা।
‘শিক্ষানবিশ সাংবাদিক’ হিসেবে এক বছর কাজের অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক করা।
৪. সাংবাদিক সুরক্ষা আইন:
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইন প্রণয়নের সুপারিশ।
খসড়া আইন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তুত করে দেওয়া হয়েছে।
৫. গণমাধ্যমে কালো টাকা ও রাজনৈতিক প্রভাব:
গণমাধ্যমে কালো টাকা বিনিয়োগের প্রবণতা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব।
রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে গণমাধ্যমের মালিকানা প্রদান বন্ধের সুপারিশ।
৬. সরকারি বিজ্ঞাপন নীতি পুনর্বিবেচনা:
সরকারি হিসাবে ৬০০ পত্রিকা সরকারি বিজ্ঞাপনের যোগ্য হলেও প্রকৃত বিক্রিত সংখ্যা মাত্র ৫২টি।
ভুয়া পত্রিকা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা, যাদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, দ্য ফিন্যানসিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, অ্যাটকোর প্রতিনিধি অঞ্জন চৌধুরী, নোয়াবের সচিব আখতার হোসেন খান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাবেক উপ মহাপরিচালক কামরুন নেসা হাসান, মিডিয়া সাপোর্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক সাংবাদিক জিমি আমির, ডেইলি স্টারের বগুড়া জেলা প্রতিনিধি মোস্তফা সবুজ, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর টিটু দত্ত গুপ্ত এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুন।