বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন: জাতিসংঘের প্রতিবেদন জেনেভায় উপস্থাপন
বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নির্যাতনের ওপর জাতিসংঘের মানবাধিকার তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদনটি আজ জেনেভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টার পর এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানটি জেনেভা থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৮তম অধিবেশনে একটি বিশ্বব্যাপী আপডেট উপস্থাপনকালে ভলকার তুর্ক বলেন, ফৌজদারি মামলায় যথাযথ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক সহিংসতার তদন্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি উল্লেখ করেন, গত বছর বাংলাদেশে সহিংসতায় এক ব্যাপক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। তৎকালীন সরকার ছাত্র আন্দোলনকে ‘নৃশংসভাবে দমনে’ মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।


তিনি আরও বলেন, দেশ এখন একটি নতুন ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করছে। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সম্পর্কে আমাদের সাম্প্রতিক স্বাধীন তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালের আন্দোলনের সময় প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন নিহত এবং কয়েক হাজার মানুষ গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। অনেকেই আজীবনের জন্য কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের বেশিরভাগই মিলিটারি রাইফেল ও প্রাণঘাতী মেটাল প্যালেটস লোড করা শটগানে নিহত হয়েছেন, যা সাধারণত বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে থাকে।
এছাড়া, ২ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস জানান, এই প্রতিবেদন উপস্থাপনের পাশাপাশি জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধান দল বাংলাদেশে জবাবদিহিতা, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের বিষয়ে অনুসন্ধান ও সুপারিশ নিয়ে সদস্য রাষ্ট্র ও বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করবে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর থেকে ‘বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টের আন্দোলন সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন’ শীর্ষক একটি অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে উঠে আসে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রকৃত ও বাস্তব চিত্র, যা জবাবদিহিতা, ক্ষতিপূরণ এবং এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সহায়ক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।