‘আমিন, আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হলো তুরাগ তীর, মোনাজাতে যা বলা হলো
দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি, দেশের কল্যাণ ও মুসলিম জাতির হেদায়েত কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো তাবলিগ জামাত আয়োজিত ছয় দিনব্যাপী ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে মোনাজাত শুরু হয়ে শেষ হয় ৯টা ৩৬ মিনিটে। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা জুবায়ের সাহেব। মোনাজাত শেষ আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টঙ্গীর তুরাগ তীর ও ইজতেমা ময়দানের আশপাশ। তিনি আরবি ও বাংলা ভাষায় মোনাজাত করেন।
মোনাজাতে যা বলা হলো
‘হে আল্লাহ আমাদের ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত সকল গুনাহ মাফ করে দেন। গোপন গুনাহ, প্রকাশ্য গুনাহ সব গুনাহ মাপ করে দেন। এ বিশাল ময়দানে যারা উপস্থিত হয়েছেন তাদের মধ্য থেকে যার হাতকে আপনার পছন্দ হয় তার উছিলায় আমাদের সবার মোনাজাত কবুল করে নেন। আজ আমরা তওবা করতেছি, সকল প্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকবো। আমাদের জিন্দেগি গুনাহমুক্ত হওয়ার তওফিক দিন। দুনিয়ার সকল নর-নারীর জীবনের গুনাহ মাফ করে দেন। হে আল্লাহ ইমানের হাকিকতে তামাম নসিব করে দেন। হে আল্লাহ ইমানি সিফাত আমাদের মধ্যে পয়দা করে দেন। হে আল্লাহ আমাদের ইমানি জিন্দেগি নসিব করে দেন। হে আল্লাহ আমাদের আমানি হাওয়া চালিয়ে দেন। হে আল্লাহ ইমানকে শক্তিশালী করে দেন।’


এর আগে সকালে বয়ান করেন মাওলানা আব্দুর রহমান সাহেব (ভারত), তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল মতিন সাহেব। এই বয়ানে ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা সাহেব নসিহতমূলক কিছু কথা বলেন। এর তরজমা করেন মাওলানা জুবায়ের সাহেব। এরপরই দোয়া দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম পর্বের শুরায়ী নেজামের ইজতেমা আয়োজক কমিটির মিডিয়া সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, রোববার বাদ ফজর ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমানের হেদায়েতি বয়ানে ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়। যারা এখান থেকে চিল্লা, ৩ চিল্লার জন্য জামাতে বের হবেন, তারা জামাতে গিয়ে কি আমল করবে এবং মহল্লায় যারা এখান থেকে ফিরে যাচ্ছেন তারা নিজ এলাকায় গিয়ে কি আমল করবে তার দিকনির্দেশনামূলক বয়ান করা হচ্ছে। মাওলাসা আব্দুল মতিন তাৎক্ষণিকভাবে তা বাংলায় অনুবাদ করেছেন।
তিনি আরো জানান, এই বয়ানের পরেই ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা সাহেব নসিহতমূলক কিছু কথা বলবেন। তা বাংলায় অনুবাদ করেন মাওলানা জুবায়ের।
এদিন আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ চারপাশের এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, মার্কেট, বিপণিবিতান, অফিসসহ সবকিছু ছিল বন্ধ। সোমবার থেকে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা।
আর ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাদ অনুসারীদের দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
কাঙ্ক্ষিত আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে ইজতেমাস্থলের চারপাশের ৩-৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। আখেরি মোনাজাতের জন্য রোববার আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানাসহ বিভিন্ন অফিস-আদালতে ছুটি চলছে। কোনো কোন প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা না করলেও কর্মকর্তাদের মোনাজাতে অংশ নিতে বাধা ছিল না। নানা বয়সী ও পেশার মানুষ এমনকি নারীরাও ভিড় ঠেলে মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার সকালেই টঙ্গী এলাকায় পৌঁছান।