বিনিয়োগ না আসার জন্য কেবল রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাই দায়ী নয়: সিপিডি
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, দেশে বিনিয়োগ না আসার ক্ষেত্রে কেবল রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাই একমাত্র কারণ নয়। তিনি মনে করেন, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দক্ষতা এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৪-২৫: সংকটময় সময়ে প্রত্যাশা পূরণের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।


ব্রিফিংয়ে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষণা ফেলো মুনতাসির কামাল ও সৈয়দ ইউসুফ সাদাত।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অনেকেই বিনিয়োগ কমার জন্য শুধুমাত্র রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে দায়ী করেন, তবে এটি মূল কারণ নয়। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা গুরুত্বপূর্ণ, তবে বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা, সময়মতো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং স্বচ্ছ নীতি গ্রহণ জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিনিয়োগ বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদি নীতি ও কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। আমরা যদি যথাযথ পরিকল্পনা নিতে পারি, তাহলে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে হতাশার কিছু নেই।’
বাংলাদেশের কর-জিডিপি হার এখনও ৮ শতাংশের নিচে, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সিপিডির ফেলো। তিনি বলেন, ‘এটি বাড়ানো না গেলে আমরা বাধ্যতামূলক ঋণনির্ভরতায় চলে যাবো, যা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।’
অনেকে মনে করেন, আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) চাপে কর বৃদ্ধি করা হচ্ছে, তবে ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আমাদের কর-জিডিপি হার অনেক কম, এটি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনেক আগে থেকেই ছিল। আইএমএফের কারণে নয়, বরং আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আমাদেরই কর আদায়ের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরো বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বর্তমানে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভরশীল। এই নির্ভরতা কমাতে কর আদায় বাড়ানো এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি জরুরি।’