বাগেরহাটে ট্রান্সফরমার চুরি বাড়ছে, সাড়ে তিন মাসে গায়েব ২৪টি
বাগেরহাটে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সাড়ে তিন মাসে ২৪টি ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ায় কয়েক হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় পড়েছেন। চুরি যাওয়া এসব ট্রান্সফরমারের আর্থিক মূল্য প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা।
সর্বশেষ ১৭ জানুয়ারি ফকিরহাট উপজেলার পাগলা-শ্যামনগর এলাকায় একটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। একই দিনে বাগেরহাট সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামে এবং পার্শ্ববর্তী বিষ্ণুপুর এলাকায় চুরির ঘটনা ঘটে। ফতেপুরে চুরি হওয়া ট্রান্সফরমারের পরিবর্তে নতুন ট্রান্সফরমার বসানো হলেও এলাকাবাসীকে দুই দিন বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হয়।


বাগেরহাট সদর উপজেলার দড়িতালুক, মেগনিতলা, চাপাতলা, বাগমারা, বাদোখালীসহ বেশ কয়েকটি এলাকায়ও এ ধরনের চুরির ঘটনা ঘটেছে। চুরি ঠেকাতে অনেক জায়গায় ট্রান্সফরমার লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার মতো উদ্যোগ নিচ্ছেন গ্রাহকরা।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নিয়ম অনুযায়ী, চুরি হওয়া এলাকায় নতুন ট্রান্সফরমার বসানোর জন্য গ্রাহকদের অর্ধেক টাকা পরিশোধ করতে হয়। দ্বিতীয়বার চুরি হলে পুরো অর্থ গ্রাহকদের দিতে হয়। এতে দরিদ্র গ্রাহকরা চরম অসুবিধার মুখে পড়ছেন।
ফতেপুর এলাকার বাসিন্দা মিনা নাজমুস সাকিব জানান, “আমাদের ট্রান্সফরমার চুরি হয়ে যাওয়ায় তিন দিন বিদ্যুৎহীন থাকতে হয়েছে। নতুন ট্রান্সফরমারের জন্য ২২ হাজার টাকা দিতে হবে, যা জোগাড় করা খুবই কষ্টসাধ্য।”
বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক সুশান্ত রায় জানান, প্রতিটি চুরির ঘটনায় থানায় এজাহার করা হয়েছে। তবে চোরদের এখনও আটক করা সম্ভব হয়নি। তিনি জানান, চোরেরা ট্রান্সফরমারের ভেতরের তামার তার চুরি করে ভাঙারির দোকানে বিক্রি করছে। ভাঙারির দোকানগুলোর ওপর নজরদারি বাড়ালে চুরি রোধ করা সম্ভব হবে।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার তৌহিদুল আরিফ বলেন, “চুরির ঘটনায় পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। শিগগিরই চোরদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।”
বাগেরহাটের ৯টি উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের ৫ লক্ষাধিক গ্রাহক রয়েছেন। বারবার চুরির ঘটনায় বিদ্যুৎ বিভাগ ও গ্রাহকদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। গ্রাহকরা চোর চক্রকে শনাক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।