আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা উচিত নয়: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা উচিত নয়। যারা অপরাধ করেছে, তাদের তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনা উচিত। তবে শুধুমাত্র দলের পরিচয় দিয়ে কাউকে অপরাধী ধরে নেওয়া ঠিক হবে না।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সংবিধান সংরক্ষণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


জিএম কাদের বলেন, “একটি দলের সবাই অপরাধী হতে পারে না। আওয়ামী লীগ বা যে কোনো দলের কারও বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ থাকলে সঠিক তদন্ত করে বিচার করতে হবে। আমরা চাই, আগামী নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সবার জন্য উন্মুক্ত থাকা উচিত।”
জিএম কাদের বলেন, “২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৪৮.০৪ শতাংশ ভোট পেয়ে ২৩০টি আসন পেয়েছিল। বিএনপি পেয়েছিল ৩০টি আসন, ভোটের হার ছিল ৩২.০৫ শতাংশ। জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ২৭টি আসন, ভোটের হার ছিল ৭.০৭ শতাংশ। অথচ দেশের প্রায় ৫০ শতাংশ জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকেই সংলাপ বা জাতীয় ঐক্যের উদ্যোগে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এতে জাতিগত বিভক্তি এবং সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “শান্তিপূর্ণ মিছিল-মিটিং করা সাংবিধানিক অধিকার। অথচ আমাদের সেই অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে। পার্টি অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার এবং জামিনে বাধা দেওয়ার মতো নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে।”
জিএম কাদের আরও বলেন, “দেশে একটি বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়তে রাষ্ট্রযন্ত্রের সংস্কার প্রয়োজন। শুধুমাত্র ক্ষমতা থেকে শেখ হাসিনাকে সরানো নয়, দানবীয় সরকারব্যবস্থার অবসান চাই। সবাইকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে হবে, যেখানে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত প্রতিফলিত হবে।”
তিনি বলেন, “সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। তবে ৪৮টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে মাত্র ১৮টি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। এটি জাতীয় ঐক্যের পরিবর্তে জাতীয় অনৈক্যের সূচনা করেছে।”
আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়াসহ দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।