বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট, হতাশ ক্রেতারা
বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার খুচরা বাজারগুলোতে ভোজ্যতেল না পেয়ে ক্রেতারা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। সরবরাহ কম থাকায় অনেক দোকানে তেল নেই, আর যেখানে আছে, সেখানেও গায়ের দামের চেয়ে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে।
মিরপুরের মুসলিম বাজারে এক সপ্তাহ ধরে তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। আলিমুদ্দিন নামের এক বিক্রেতা জানান, “কোম্পানি রেট বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। গত তিন দিন ধরে তেল পাইনি।”


কৃত্রিম সংকটের অভিযোগ
বাজারের খুচরা বিক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, তেল কোম্পানিগুলো কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। অনেক দোকানদার জানান, ডিলাররা তেল সরবরাহের শর্ত হিসেবে অন্যান্য পণ্য কিনতে বাধ্য করছেন।
একইসঙ্গে ক্রেতাদের অভিযোগ, আমদানি বাড়াতে শুল্ক ও কর কমানো হলেও বাজারে এর প্রভাব পড়েনি। বরং পণ্যের দাম উল্টো বেড়েছে। সানমুন নামের এক ক্রেতা বলেন, “তেল তো আগে আমদানি হয়েছে। এখন বিশ্ববাজারের দামের অজুহাতে সংকট দেখানো হচ্ছে। এটা অযৌক্তিক।”
সরবরাহ কম, দাম বেশি
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে ৩ লাখ ৬৮ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল আমদানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ কম। আমদানিকারকরা বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করলেও ভোক্তারা মনে করছেন, সংকট মূলত কৃত্রিম।
এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও দোকানগুলোতে ১৭০-১৭৫ টাকা চাওয়া হচ্ছে। দুই লিটারের বোতলের দাম ৩৪০ টাকার বদলে ৩৪৬ টাকায় উঠেছে। খোলা তেলের দামও বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৭০-১৭৫ টাকা এবং পাম তেল ১৬০-১৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরকার শুল্ক ও কর কমিয়ে তেলের দাম সহনীয় করার চেষ্টা করলেও সংকট কাটেনি। এ অবস্থায় ভোক্তারা কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ ও মাংসের দাম
বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৮০ টাকায়। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজিতে। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫-১৯৫ টাকা, কক মুরগি ২৯০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০-৫৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আকার ও ওজন অনুযায়ী, প্রতি কেজি ইলিশ মাছ ৮০০-২২০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৮০০ টাকা, শিং ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা ৫০০-৮০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৯০০ টাকা, কাজলী মাছ ৮০০-১২০০ টাকা, রুই ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০-৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০-৮০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১২০০ টাকা, কাচকি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।