আকার বাড়ছে ইউনূসের উপদেষ্টা পরিষদের, সন্ধ্যায় শপথ গ্রহণ
নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। আজ রোববার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আরও পাঁচ নতুন উপদেষ্টা শপথ নেবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
গত ৮ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে তিন মাস পূর্ণ করেছে। বর্তমানে ২১ সদস্যের এই উপদেষ্টা পরিষদের অনেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। একাধিক মন্ত্রণালয় পরিচালনার ফলে দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগও করেছেন রাজনীতিবিদরা। এ কারণে উপদেষ্টা পরিষদের পরিসর বাড়ানোর দাবি উঠেছে।


বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, মানবাধিকার কর্মী, শিক্ষাবিদ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামগুলো হলো: সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন বিশেষজ্ঞ ড. আসিফ নজরুল, মানবাধিকারকর্মী আদিলুর রহমান খান, সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেন এবং পরিবেশবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
নতুন পাঁচ উপদেষ্টা যোগদানের পর পরিষদের কার্যক্রমে গতি আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা সরকারের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
যাদের নাম আলোচনায়
আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) থেকে সদ্য পদত্যাগ করা আহ্বায়ক ও সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, ড. মঞ্জুরুল ইসলাম, মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ ছাড়া একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও নতুন উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত হতে পারেন।
এর আগে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস শপথ গ্রহণ করেন। বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টাসহ এ সরকারের সদস্য ২১ জন। তাদের অনেকেই পালন করছেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের তিনজন উপদেষ্টা তিনটি করে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। দুটি করে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন ১০ জন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অধীনে আছে ৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।
প্রধান উপদেষ্টা সামলাচ্ছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, খাদ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
এ ছাড়া অর্থ, বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ; আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ড. আসিফ নজরুল।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের ওপর। লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সামলাচ্ছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়। হাসান আরিফ সামলাচ্ছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়। আদিলুর রহমান খান সামলাচ্ছেন শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আসিফ মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ফারুক-ই-আজম, বস্ত্র ও পাট এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে শারমীন এস মুরশিদ দায়িত্ব পালন করছেন।