‘দেশের প্রত্যেক নাগরিককে ইউনিক হেলথ আইডি দেওয়া হবে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৭:২১ অপরাহ্ণ, জুন ২৫, ২০২৪

দেশের প্রত্যেক নাগরিককে ইউনিক হেলথ আইডি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন-দেশের প্রত্যেক নাগরিককে ইউনিক হেলথ আইডি প্রদানের জন্য হেলথ প্রোফাইল তৈরির উদ্দেশ্যে শেয়ার্ড হেলথ রেকর্ড প্রণয়নের কাজ চলমান আছে। নির্দিষ্ট কিছু হাসপাতালে পরীক্ষামূলকভাবে ইউনিক হেলথ আইডি প্রদানের কাজ শুরু হয়েছে। ওই পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের ফলাফলের ভিত্তিতে শিগগিরই এই কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে। পরীক্ষামূলক ইউনিক হেলথ আইডি প্রদান কার্যক্রমের আওতায় এই পর্যন্ত ১৪ লাখ ৩ হাজার ৮৮৯টি আইডি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশের প্রত্যেক নাগরিককে ইউনিক হেলথ আইডি দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (২৫জুন) সংসদের প্রশ্নোত্তরে সরকার দলীয় এমপি মাহমুদ হাসান রিপনের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী। এর আগে স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হলে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।

একই প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখার এইচআইএস অ্যান্ড ই-হেলথ অপারেশন প্লানের আওতায় বর্তমানে ৬৭ হাসপাতালে অটোমেশন চালু করা হয়েছে। সকল হাসপাতালে অটোমেশন চালু করার লক্ষ্যে ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে।

দেশে বর্তমানে ৭২টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। আইন ও নীতিমালা অনুসারে মানসম্পন্ন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা না করায় চারটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে এবং দুইটি মেডিকেল কলেজের অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল।

তিনি বলেন- সরকারি ও বেসরকারি মিলে দেশে মোট মেডিকেল কলেজ ১১০টি। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি মেডিকেল কলেজ ৩৭টি, যার আসন সংখ্যা ৫ হাজার ৩৮০টি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত সরকারি মেডিকেল কলেজ একটি, যার আসন সংখ্যা ১২৫টি। এছাড়া বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ৭২টি। এর মধ্যে সেনাবাহিনী পরিচালিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ৫টি, যার আসন সংখ্যা ২৬০টি। অপর ৬৭টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন ৬ হাজার ২৯৭টি।

১৪ হাজার ২৭৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে: মাইনুল হোসেন খানের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, সারাদেশে বর্তমানে ১৪ হাজার ২৯২টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। তার মধ্যে মোট ১৪ হাজার ২৭৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে। নতুন আরও ৯৮টি কমিউনিটি ক্লিনিকের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।

Nagad

জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এ তথ্য জানান। বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, কমিউনিটি ক্লিনিক বর্তমান সরকারের সাফল্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত যা দেশে-বিদেশে নন্দিত। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ জনগণ সমন্বিত স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টি সেবা পাচ্ছেন। এটি জনগণ ও সরকারের যৌথ প্রয়াসে বাস্তবায়িত একটি কার্যক্রম। জনমুখী এ কার্যক্রম ১৯৯৬ সালে গ্রহণ করে ১৯৯৮ সালে বাস্তবায়ন শুরু হয়। ১৯৯৮-২০০১ সময়ে ১০ হাজারের অধিক কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মিত ও অধিকাংশই চালু করা হয় এবং জনগণ সেবা পেতে শুরু করে। ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর এ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং এ অবস্থা ২০০৮ সাল অবধি চলমান থাকে। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় নদীভাংগন ও অন্যান্য কারণে ৯৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক ধ্বংস হয়ে যায় এবং ১০ হাজার ৬২৪টি বিদ্যমান থাকে।

তিনি জানান, কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ৪র্থ সেক্টর কর্মসূচীতে (জানুয়ারি ২০১৭ হতে জুন ২০২৩ মেয়াদে) কমিউনিটি বেইজ হেলথ কেয়ার অপারেশনাল প্ল্যান অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট এর আওতায় কমিউনিটি বেইজ হেলথ কেয়ার অপারেশনাল প্ল্যান এর মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক এর সমস্ত কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে।

কমিউনিটি ক্লিনিক হতে গ্রামীণ জনগণকে মূলতঃ স্বাস্থ্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য উন্নয়ন, পুষ্টি, পরিবার পরিকল্পনা, উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগ সনাক্তকরা, সীমিত নিরাময়মূলক সেবাসহ জরুরি ও জটিল রোগীদের যথাযথ ব্যবস্থাপনার জন্য উচ্চতর পর্যায়ে রেফার সংক্রান্ত সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া অসংক্রামক রোগসমূহ প্রাথমিকভাবে নিরূপণ এবং উচ্চতর পর্যায়ে রেফার যেমনঃ উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আর্সেনিকোসিস, অটিজম ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম আরও জোরদারকরণ এবং একটি কার্যকর রেফারেল ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।