‘শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, কারও সাথে জেলাসি করি না’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৩:০৯ অপরাহ্ণ, জুন ২৫, ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর মেয়ে। এই জায়গায় কেউ আসতে পারবে না। আমি কারও সাথে জেলাসি করি না। আমি এর, ওর কাছে ধরনা দিয়ে বেড়াই না। দেশ বেচি না, দেশের স্বার্থও বেচি না।

তিনি বলেন-, নোবেল প্রাইজের জন্য না কি আমি ড. ইউনূসকে হয়রানি করছি। আমার সঙ্গে আসলে কারো কোনো দ্বন্দ্ব নেই। জীবনেও আমার নোবেল প্রাইজের জন্য কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই। নোবেল প্রাইজ পেতে লবিস্ট রাখার মতো অত টাকা-পয়সাও নেই। আর আমি কখনো চাইনি।

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সরকার লাগতে যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক জেনারেল এরশাদের আমলে হয়েছে। ড. ইউনূস সেখানকার এমডি ছিলেন। সেখানের শ্রমিকদের বেতন তুলতেন। বয়স ৬০ বছরের বেশি হওয়ায় তাকে ওই পদ থেকে সরে যেতে বলা হয়েছিল। তিনি সরে যাননি। সে সময় তিনি অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে হেরে গেছেন।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি দুই দফা ভারত সফর সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার বিরুদ্ধে মামলাও সরকার করেনি। গ্রামীণফোনের ব্যবসা আমি তাকে দিয়েছিলাম। একটি টাকাও তিনি ব্যাংককে দেননি। তিনি সব টাকা নিজের করে নিয়েছেন।

সরকারপ্রধান বলেন, শ্রমিকদের মামলায় ড. ইউনূস সাজা পোয়েছেন। ইউনূসকে উঠিয়েছিলাম আমি। এতই যদি করেছেন তবে দারিদ্র্যমুক্ত হলো না কেন। দেশে দারিদ্র্যের হার কমিয়েছি আমি।

Nagad

ড. ইউনূস শেখ হাসিনার হাতেই সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছেন বলেও দাবি করেন সরকারপ্রধান।

যারা অবৈধ উপায়ে অঢেল টাকা-পয়সার মালিক হন তাদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এত টাকা বানিয়ে লাভ কী, যে টাকার কারণে দেশ ছেড়ে ভাগতে হয়। কিছু মানুষ লোভী হয়ে যায়। টাকা-পয়সার লোভ এত বেড়ে যায় যে, দেশ বাদ দিয়ে বিদেশে রাখতে গিয়ে পরে দেশ থেকে ভাগতে হয়। সেই অর্থ বানিয়ে লাভটা কী হলো। এতই অর্থ বানিয়ে ফেলল যে, শেষে আর দেশেই থাকা যায় না। তাহলে লাভ হয় কী? এটা তো মানুষ চিন্তা করে না।’

অর্থ পাচারকারীদের সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘টাকা বানানোটা তাদের নেশার মতো পেয়ে যায় মনে হয়। এটা হলো বাস্তব কথা। তবু আমি বলব, যেখানে যেটুকু সমস্যা আছে, সেগুলো সমাধানে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। তার জন্য আমরা আইনও তৈরি করেছি।’

ব্যাকিং খাতের অব্যবস্থাপনা নিয়ে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুলের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের আমলে আমরা সবচেয়ে বেশি বেসরকারি খাত খুলে দিয়েছি। হ্যাঁ, ব্যাংকিং খাতে কেউ ভালো চালাচ্ছে, কেউ খারাপ চালাচ্ছে। কোনো সময় অনেকে ঠিকমতো চালাতে পারে না। এটা চিরাচরিত নিয়ম।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদি কোনো ব্যাংক দুর্বল হয়ে যায়, সেটাকে সহযোগিতা করা বা একটা ব্যাংকের সঙ্গে আরেকটা ব্যাংককে একীভূত করা হয়। অর্থাৎ যারা সেখানে আমানত রাখে, তাদের রক্ষা করাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেটাই পালনের চেষ্টা করা হচ্ছে।’

একটা দেশের মধ্যে অন্য দেশের ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কী বলে প্রশ্ন রাখেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রেল যেগুলো বন্ধ ছিল (ভারতের সঙ্গে) সেগুলো আস্তে আস্তে খুলে দিচ্ছি। অর্থনীতিতে এটা বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছে । আমরা বাংলাদেশে কী চারদিকে দরজা বন্ধ করে থাকব? ইউরোপের দিকে তাকান সেখানে কোনো বর্ডার নেই। সেখানে কী এক দেশ আরেক দেশ বিক্রি করে দিচ্ছে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ। সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা খুলে দিলাম, এর উপকার পাবে সাধারণ মানুষ। ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ২১ জুন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতের নয়াদিল্লি যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।