আসুন আমি নই, আমরা হয়ে উঠি: মোহাম্মদ আনোয়ার হেসেন

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৬:২২ অপরাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২৪

খোলা আকাশ দেখতে ভালো লাগে না প্রানীকূলে খুঁজে পাওয়া দুস্কর। তাইতো প্রতিটি জাতিসত্তা তার নিজস্ব সংস্কৃতির আবহে আকাশের সাথে মিতালী সুদৃঢ় করে থাকে। পৃথিবীর মানচিত্রে ভৌগলিক ভাবে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি সবময়ই সভ্যতা থেকে সভ্যতার সংযোগে অবদান রেখে যাচ্ছে এবং সংযোগ সাধন করছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার ও আমুল পরিবর্তন দেখা যায়।

পরিবেশ ও প্রতিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে একই আকাশের নিচে সবার বসবাস করতে চাওয়ার প্রবনতার আলোকে বৈশ্বিক চিন্তাটি সর্বজন স্বীকৃত। আকাশ সংস্কৃতির বৈশ্বিক সময়ে, হাজার হাজার বছর ধরে লালিত এবং পালিত বাঙালীর নিজস্ব সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সমূহের সঠিক আর যুতসই ব্যবহারের মাধ্যমে, তথ্য প্রবাহের অবাধ স্বাধীনতার সফলতা আমাদের আসবেই; তা সমসাময়িক বছরগুলোতে প্রতিয়মান হয়েছে। দুর্বার অগ্রগতিতে এগিয়ে চলছে আমাদের বাংলাদেশ। এই আমাদের সবচেয়ে ভালো লাগা।

বিগত কয়েক বছরে বিশ্বব্যাপী সামাজিক যোগযোগ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে, বাংলাদেশ ও পিছিয়ে নেই এক্ষেত্রে। আকাশ সংস্কৃতির এই যুগে প্রবেশের স্বাধীনতা থাকলে যে কেউ সহজেই পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তের মুহূর্তটাকে নিজের একান্ত কাছের করে দেখতে পারে। বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অপরিসীম গুরুত্ব বহন করে। ফেইসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, ইনস্টাগ্রামসহ নানান ধরনের সোশ্যাল সাইটে আমাদের পদচারণা চোখের পড়ার মতো। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে একজন মানুষের প্রতিফলন স্বরূপ।

বিশাল ভূ-খন্ডের বদ্বীপময় বাংলাদেশের অধিকাংশ পরিবারের প্রতিটি ব্যক্তিবর্গের প্রয়োজনীতার নিরিখে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে যেমন উপকারিতা আছে, তেমনি রয়েছে ভোগান্তিও। গুজবের অনেক ঘটনা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বেশি ঘটছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমূহ জনপ্রিয়তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হয়রানির মাত্রাও বাড়ছে। আইডি হ্যাক, ছবি ও তথ্য চুরি, ভুয়া আইডিসহ নানাভাবে অনেকেই হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তাই অনেক সময় এটি আনন্দের চেয়ে বিষাদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ কারণে জনপ্রিয় এ মাধ্যমসমূহ ব্যবহারে সর্তক থাকা প্রয়োজন।

সতর্কতাটা শুরু হউক নিজের পরিবার থেকে। তথ্য প্রবাহের ধারাবাহিক অগ্রসরতার উৎকর্ষতায়, পৃথিবী মানচিত্রে লাল সবুজের অবস্থান ও অনেক সুদৃঢ় এবং মজবুত হবে। তারুন্যে বহমান আমরা বাঙালী জাতীরা, আমাদের স্বাধীনতা পরবর্তী থেকে আজ অবধি অধিকাংশ ক্ষেত্রে অবাধ তথ্য প্রবাহের সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেয়ার সাফল্য, পৃথিবীর বুকে সম সাময়িক মানচিত্র অর্জনকারীদের নিকট আশ্চর্যান্বিত মনে হয়। যেমনটা সততা, নিষ্ঠা আর আন্তরিকতার সাথে কাজের মাধ্যমে সর্বজন স্বীকৃত সূচকসমূহের প্রভূত অর্জনসমূহ বিশ্ব দরবারের বিভিন্ন সভাসদদের নিকট প্রশংসিত হয়। আসুন, সারা বছরের কিংবা সারাটি জীবনের তথ্য-প্রযুক্তিতে নিজের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারের বিষয়সমূহকে, সকলে মিলে, উপলব্ধির আলোকে নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমূহে অবস্থানটাকে সাজিয়ে তুলি।

পরিবারের একজন হিসেবে পরিবারের ভেতরকার সকলেরই সকলের প্রতি যত্নবান হতে হয়। যতœটা সবার জন্যই। পরিবারের সকলের ব্যক্তিবর্গের মাঝে পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ ও নৈতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠায় সকলকে অগ্রনী ভুমিকা পালন করতে হবে। পরিবারসমূহের ভেতরকার সকলের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং নৈতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজের নিয়ামক হিসেবে পরিবারের সদস্যরা সমগ্র সমাজ জুড়েই সুন্দরতম সময় উপহার দিতে পারবে।

Nagad

যদি কোন শিশু-কিশোরদের সামাজিক নেটওয়োর্কের অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে, অধিকাংশ সময় ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সেটিংস্, প্রোফাইল ডিফল্ট থাকে যা হয়ত সবার জন্য উন্মুক্ত, এই ক্ষেত্রে শিশু-কিশোরদের অভিভাবকদের উচিত হবে সেই অ্যাকাউন্টের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সেটিংস্, প্রোফাইলে যাতে সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা থাকে তার বাবস্থা করা। অনেক সময় শিশু-কিশোরদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানের সামাজিক মিডিয়া কার্যকলাপ চেক করতে পারেন বা “অনুসরণ” করতে পারেন, যাতে করে তাদের সন্তানকে সামজিক ও নৈতিকতা বোধ শিক্ষা দেয়া যায়। যাতে করে শিশু, কিশোর-কিশোরীরা বুঝতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কি করা উচিত এবং কি করা উচিত নয়।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে তথ্য এবং তত্ত্ব সম্পর্কে ধারনা পাওয়া অতি দ্রুততার সাথে করা যাচ্ছে। চাইলেই, নিজের একান্ত কোন মনের ভেতরকার মানসিক অবস্থার ও জানান দেয়া যায় খুব সহজেই। এসব সমস্যা নিয়ে অতি উৎসাহিত হওয়ার যেমন প্রয়োজন নেই তেমনি ভেঙে পড়ার কিছু নেই। কারণ এর সহজ সমাধান আছে। এ জন্য জানতে হবে কিছু কৌশল।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুষম খাদ্যাভাসে শিশুকালীন সময়টাতে বুদ্ধির বিকাশ সাধন হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তেমনি করে জীবনের প্রতিটি ধাপ যেমন- কৈশোরকালীন, যৌবন এবং প্রৌঢ়ত্বের সময়টাতেও অভ্যাসমূহ চালিয়ে নিতে হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। করোনাকালীন সময়ে একে অপরের স্বাস্থ্যবিধি এবং সুষম খাদ্যাভাসের ব্যাপারে সচেতনার মাধ্যমে সহভাগী হয়েছি। যেমনি করে নিজে এবং পারিবারিক সকলে সুস্থ্য সবল রাখার প্রানান্তকর চেষ্টাসমূহ আমাদেরকে আশান্বিত করে।

তেমনি করে আমাদের সকলকে যে যার অবস্থানে থেকে একান্ত নিজের মনস্তত্বে লালন করে, বছর থেকে যুগ এবং শতাব্ধী থেকে শতাব্দী পর্যন্ত এক অন্যের হয়ে উঠতে হবে। অমি নই , আমরা হিসেবে নিজেদের পরিচয়ে বলীয়মান হতে হবে। তখনই এই পৃথিবীর যে যেখানে যে আবস্থাতেই থাকুক না কেন সেই ব্যক্তিবর্গ মাত্রই অনুধাবন করতে পারবে বাংলাদেশের স্বকীয়তা।

লেখক: সমাজকর্মী (social Worker)