‘বার বার আঘাত আসার পরও এ সংগঠনের কেউ ক্ষতি করতে পারে নাই’

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ১০:২৫ অপরাহ্ণ, জুন ২৩, ২০২৪

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন-নানা সময়ে আওয়ামী লীগ নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সবশেষ ২০০৭ সালেও চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু কেউ পারে নাই। ফিনিক্স পাখি যেমন পুড়িয়ে ফেলার পরও ভস্ম থেকে জেগে ওঠে, আওয়ামী লীগও তেমন। বার বার আঘাত আসার পরও এ সংগঠনের কেউ ক্ষতি করতে পারে নাই।

রোববার (২৩ জুন) আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় তিনি দলকে সুসংগঠিত করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে নেতাকর্মীদের তিনি বলেন, এ সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে হবে। আর জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। যদি সংগঠন শক্তিশালী হয়, দেশের গণমানুষের সমর্থন পাওয়া যায়…। হ্যাঁ, মৃত্যু হলে তো কিছু করার নেই। মৃত্যুর ওপর তো কারও হাত নেই। যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ। মানুষের জন্য কাজ করে যাবো।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারুক, সেটাই চাই। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগ বার বার জ্বলে ওঠে। বাংলাদেশের লাখো মুজিব সৈনিক কখনও পরাভব মানে না। মাথা নত করে না।

শেখ হাসিনা বলেন, হয়ত কখনও কখনও কোনো নেতা ভুল করেছেন। ভেবেছেন, তারাই বোধহয় বড় নেতা। দলের চেয়ে নিজেকে বড় মনে করে বেরিয়ে গিয়ে অন্য দল করেছেন। কিন্তু তারা ভুল করেছেন। কেন?

Nagad

প্রধানমন্ত্রীই এর কারণ ব্যাখ্যা করেন। তা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগকে সূর্যের সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। বলেন, আকাশে মিটিমিটি তারা জ্বলে। সেই তারা আলোকিত হয় সূর্য দিয়ে। যেসব নেতা দল ছেড়ে গিয়েছিলেন, ভুলে গিয়েছিলেন যে তারা আলোকিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ দিয়ে। দল ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ওই তারা (দল ছেড়ে যাওয়া নেতারা) আর জ্বলে নাই; নিভু নিভু। কিছু তারা মিটেই গেছে।

শেখ হাসিনা তার সরকারের সময়ে নেয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। বলেন, এই দেশে অতিদরিদ্র বলে কেউ থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, ২০৪১, ২১০০, অনেক বয়স হয়েছে, হয়ত ততদিন থাকবো না। কিন্তু আজকে যারা নবীন, তারাই স্মার্ট বাংলাদেশের মূল সৈনিক হবে। আমরা তাদের জন্য স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে এই হোক অঙ্গীকার।

আওয়ামী লীগ ছেড়ে যাওয়ায় অনেক নেতা হারিয়ে গেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বারবার আঘাত করেও আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগ বারবারই ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে। কারণ, আওয়ামী লীগের শক্তি দেশের সাধারণ জনগণ। আমাদের শক্তি তৃণমূলের কর্মীরা, সৈনিকরা। তারা কখনো মাথা নত করে না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় নেতারা অনেকে ভুল করেছেন। আওয়ামী লীগ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। যেসব নেতা ভুল করেছেন, তারা বুঝে নাই আকাশের তারার মতো তারাও জ্বলে উঠেছিল আওয়ামী লীগের আলোতেই। চলে যাওয়ায় হারিয়ে গেছে। হ্যাঁ, অনেকে ফিরেও এসেছে, আমরা গ্রহণ করেছি। আবার অনেকে এখনো সরকার পতনের আন্দোলন করে।

শেখ হাসিনা বলেন, মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার, ২১ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস ঘোষণা, মার্তৃভাষা সংরক্ষণে প্রকল্প গ্রহণ, ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি আদায় কিন্তু আওয়ামী লীগই এনে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি পদক্ষেপের ফলে আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় মানুষের পাশে থেকেছে। আজকে বাংলাদেশের যত অর্জন, সেগুলো আওয়ামী লীগই করেছে। কিন্তু বারবার আওয়ামী লীগের ওপর আঘাত এসেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ গণমানুষের সংগঠন, জনগণের অধিকার আদায়ের সংগঠন।

শেখ হাসিনা বলেন, সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে হবে। যে কোনো একজন রাজনীতিবিদের জীবনে সংগঠন হচ্ছে সবচেয়ে বড় শক্তি। যদি সংগঠন শক্তিশালী হয় আর দেশের গণমানুষের সমর্থন পাওয়া যায় যতই ষড়যন্ত্র হোক সফল হওয়া যায়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, প্রত্যেক নেতাকর্মীকে এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বলবো আপনারা একবার চিন্তা করে দেখেন, এই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কত কষ্ট করেছে। বারবার আঘাত এসেছে। পরিবারগুলো কষ্ট করেছে। কিন্তু এই সংগঠন ধরে রেখেছে। কাজেই সংগঠন যেমন শক্তিশালী করতে হবে একই ভাবে জনগণের আস্থা-বিশ্বাস, যা আমাদের মূল শক্তি, সেটিও অর্জন করতে হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এর আগে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন শেখ হাসিনা ও উপস্থিত নেতাকর্মীরা।