জনগণের ভোট চুরি করলে কেউ কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে পারে না: শেখ হাসিনা

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:৩৪ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-বলেন ‘রোজার দিনে শ্রমিকরা মজুরির দাবিতে যখন আন্দোলন করে তখনো প্রায় ১৭ জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিল এই খালেদা জিয়া। বিদ্যুতের দাবি করেছিল কানসাটে; কৃষকরাই সেচের জন্য পানি পাচ্ছিল না। সেখানেও নয়জন মানুষকে হত্যা করা হয়। তাদের এই অপকর্মের ফলে যখন জনগণ তাদের ওপর বিতশ্রদ্ধ, সেই সময় ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি একটা প্রহসনমূলক নির্বাচন হয়, খালেদা জিয়া সেই নির্বাচনে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে। মাত্র ২২ শতাংশ ভোট পড়েছিল সেখানে। সরাসরি নির্বাচিত কোনো প্রতিপক্ষ ছিল না। কিন্তু জনগণের ভোট চুরি করলে কেউ কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণ এ ব্যাপারে খুব সচেতন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলনের নামে বৃক্ষনিধন করেছে বিএনপি-জামায়াত। তারা সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির টাকাও মেরে খেতো।’

শনিবার (১৫ জুন) সকালে গণভবনে কৃষক লীগের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ ২০২৪ কর্মসূচি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে কেবল জনগণের ভোট চুরি করে নাই, কৃষকের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, হত্যা করেছে কৃষকদের বলেও মন্তব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানের পরে তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে এরশাদ ক্ষমতায় এসে জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। এ দেশের কৃষক-শ্রমিকরা সব সময় অবহেলিতই থেকে যায়। এরপর খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে শুধু জনগণের ভোট চুরি করাই না, দেশের কৃষকের ভাগ্য নিয়েও ছিনিমিনি খেলে। সার না পেয়ে কৃষক আন্দোলন করেছে। এ অপরাধে ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছিল।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিদেশ থেকে বীজ আমদানি করতো, কেননা তাদের কয়েকজনের এটা নিয়ে ব্যবসা ছিল। ‘৯৬ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণে বাধা দেয়া আন্তর্জাতিক সংস্থা, ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিল যাতে কৃষিতে ভর্তুকি বন্ধ করে দিই। আমি বলেছিলাম, আপনারা টাকা না দিলে আমি দেশের টাকাতেই তাদের ভর্তুকি দেবো।

Nagad

বিএনপি সরকার সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির পুরো টাকাই মেরে খেতো জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বনজ-ভেষজ-ফলজ গাছ লাগাতে সাধারণ মানুষকে দলীয়ভাবে উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।

কৃষকদের ভর্তুকি দেওয়া হয়। টাকা দিতে গেলেই তো মাঝখান থেকে কেউ কেউ আবার তোলা তুলেন, মানে টাকা নেন। কৃষকের বরাদ্দে যেন কেউ ভাগ বসাতে না পারে সেই কারণে কৃষি উপকরণকে কার্ড সহ ডিজিটাল পদ্ধতিতে এই অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তার ফলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছিল। যখন তিনি এই ঘুনেধরা সমাজ ভেঙে নতুন সমাজ গড়ার পদক্ষেপ নেন এবং বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে আত্মমর্যাদাশীল করে গড়ে তোলার বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা দেন। আমাদের দুর্ভাগ্য সেই সময় জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

আওয়ামী লীগ ১৯৮৪ সাল থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে আসছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখন রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। পরিবেশ রক্ষা বা জলবায়ু পরিবর্তন এসব কিন্তু তখনও বিশ্বে আসে নাই। কিন্তু আওয়ামী লীগ, আমরা উদ্যোগ নিই। সব সময় গাছ লাগানো আমাদের নীতি ছিল। তখন থেকে আমরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করি এবং কৃষক লীগের ওপর দায়িত্ব দিই।

সরকার প্রধান বলেন, এটা আমরা শিখেছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাছ থেকে। তিনি এ দেশের ঘোড়দৌড় বন্ধ করে দিয়েছিলেন। রেসকোর্স ময়দানে প্রথম বৃক্ষরোপণ করেন। সেখানে অনেক পুরাতন নারকেল গাছগুলো তার সময়ে লাগানো। তিনি নিজে বৃক্ষরোপণ করেন। গণভবনের পুরোনো সব গাছগুলো বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে খুব চমৎকারভাবে সাজিয়ে লাগানো।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমার খুব হাসি পায়, যখন দেখি বিএনপি ভোটের কথা উচ্চারণ করে, নির্বাচনের কথা বলে। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে এ দেশের ভোটের সমস্ত অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছিল। তার সেই হ্যাঁ-না ভোট দিয়ে যাত্রা শুরু; অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করার জন্য। একাধারে সেনাপ্রধান, তারপর আবার নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনী প্রহসন। ক্ষমতার মসনদে বসেই দল গঠন। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দলটি গঠন করে, তাকে আবার জিতিয়ে আনার জন্য ভোট চুরির একটা প্রক্রিয়া এ দেশের শুরু করেছিল।