বাস স্ট্যান্ডে ঘরমুখো মানুষের ভিড়, কাউন্টারে শুধু ‘ভাই টিকিট আছে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ১২:১৮ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২৪

গাজীপুরে পোশাক কারখানায় কাজ করেন সোহেল-কবির দুই বন্ধু। বয়স বেশি না। বাড়ি যাওয়ার জন্য সকাল ৮টায় রওয়ান দিয়ে সায়েদাবাদ যখন পৌঁছায়; তখন তপ্ত দুপুর। তাতেও ক্লান্তি নেই। তবে তাদের মাথায় চিন্তার ভাঁজ পরে, যখন শোনেন; কাউন্টারে দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়া জন্য কোনো টিকিট নেই। অনেক বাড়তি বাড়া দিয়ে ছোটো গাড়িতে যেতে হবে। শুধু-সোহেল কবিরের বেলায়ই না; যারা অগ্রিম টিক কাটেননি তাদের সবার বেলায় কাউন্টারের সেলস অফিসারের উত্তর; ঈদের আগ পর্যন্ত কোনো টিকিট নেই।

শনিবার (১৫ জুন) রাজধানীর গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, জনপদের মোড়, যাত্রাবাড়ী, ধোলাইখাল কাউন্টার ১, কাউন্টার-২ সহ সব কাউন্টারের ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।

এদিকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে পরিবারের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করতেই এত কষ্ট করেও হলেও রাজধানী ছাড়ছেন নগরবাসী। এমন চিত্র বাস-ট্রেন সব খানে। যে যেভাবে পারছেন, বাড়ির পথ ধরছেন। খোঁজ নিযে জান গেছে শনিবার (১৫ জুন) সকাল থেকে রাজধানীর মহাখালী, গাবতলী, বাস টার্মিনালসহ বেশিরভাগ বাস কাউন্টারে ভিড় করেন ঘরমুখো মানুষ।

এতো গেলো-যারা টিকিট পানটি তাদের কথা; এবার আসা যাক যারা অগ্রিম টিকিট কেটেছেন তাদের কি অবস্থা। ঘরমুখো বিভিন্ন যাত্রীদের সাথে গণমাধ্যমের কর্মীরা। সবার একটাই অভিযোগ; ভাই ‘৬টার গাড়ি কয়টায় আসে’ কেউ আবার আবার বলে-৬টার গাড়ি ৯টায় আসে। মোট কথা সবারই অভিযোগ গাড়ি সময়মতো না আসা। তাদের চোখের মুখে ক্লান্তিভাব। কেউ কেউ ঝগড়াও বাধিয়েছেন-এমন চিত্রও দেখা গেছে।

এ বিষয়ে ধোলাইপাড় কাউন্টার-১ দায়িত্বে থাকা সেলস অফিসার মো: শাহিন জানান-রাজধানীর মধ্যে ভয়ংকর জ্যাম। গুলিস্তান থেকে একটি গাড়ি আসতেই ৩ ঘণ্টা লেগে যায়। আমাদের কিছু করার নেই।

পাশ থেকেই-অন্য আরেকজন হাক ডাক দিয়ে বলে-ঈদের সময় দেড়ি হবেই। কেউ হাউ কাই করবেন না। প্রত্যেক ছাড়ার সময় দেড়ে দেড় ঘণ্টা বেশি লাগবে।

Nagad

নির্ধারিত সময়ে বাস ছাড়ছে না এ বিষয়ে পিরোজপুরের যাত্রী শাহবাগের ফুল ব্যবসায়ী দেলোয়ার বলেন-সব ফালতু কথা। এত জ্যাম কিভাবে লাগে। সব তারাই কৃত্রিমভাবে করে তৈরি করে জ্যামের দোষ দেয়। আর বাড়তি টাকা দিলেই; সিস্টেমে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। স্বাভাবাকি ভাবে পাওয়া যাচ্ছে না।

আবার অন্য আরেক যাত্রী বলছেন- মহাসড়কে যানজটের কারণে এখনও টার্মিনালে পৌঁছেনি অনেক বাস। তাই বাসের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে আমাদের।

অন্যদিকে কাউন্টার থেকে জানানো হয়েছে, পর্যাপ্ত টিকিট আছে। এদিকে, যাত্রী চাপ বাড়ায় বাড়তি ভাড়া নেয়ারও অভিযোগ করেছেন অনেকে।

এদিকে, ঈদ যাত্রার চতুর্থ দিনেও কমলাপুর রেল স্টেশন ও বিমানবন্দর রেল স্টেশনে ছিল যাত্রীদের ভিড়। ঈদ যাত্রার চতুর্থ দিনেও ট্রেনে ঘরমুখো মানুষের চাপ। সকাল থেকেই নির্ধারিত সময় পরপর বেশ কয়েকটি ট্রেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোনো শিডিউল বিপর্যয়ও হয়নি। যাত্রীরা বলছেন, ট্রেনের এবারের ঈদযাত্রা বেশ স্বস্তির।

তবে-দক্ষিণাঞ্চলে মহাসড়কে কোনো জ্যাম বা ভোগান্তি নেই। রাজধানীর ধোলাইপাড় থেকে বাস ছাড়ারে পর; আর জ্যামের বা ভোগান্তির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।