ব্যাংকে টাকা রাখার খরচ বাড়ছে, টাকা বেশি থাকলে ‘বাড়তি শুল্ক’
ব্যাংকে জমা টাকার ওপর আবগারি শুল্কের স্তর ও হারে পরিবর্তন আসছে। এতে ব্যাংকে টাকা রাখার খরচ বাড়বে। তবে পরিবর্তনের এ স্রোত ছোট আমানতকারীদের ওপর প্রভাব ফেলবে না, প্রভাব পড়বে বড় আমানতকারীদের ওপর। কারণ, ব্যাংকে গ্রাহকের ১০ লাখ টাকার বেশি থাকলেই বাড়তি শুল্ক দিতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৩টা পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পেশ শুরু হয়। সেখানে এই প্রস্তাব তোলেন প্রপ্রস্তাব তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপিস্থিতিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপনকালে এ প্রস্তাব তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী।


দুই অর্থবছর পর আবারও ব্যাংকে জমা টাকার ওপর আবগারি শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে। বর্তমানে ছয়টি স্তরে শুল্ক নেওয়া হলেও প্রস্তাবিত বাজেটে এ স্তর হচ্ছে আটটি। যেখানে গ্রাহকের আমানত ১০ লাখ টাকার বেশি হলে বাড়তি অর্থ দিতে হবে। এর আগে, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যাংকে থাকা টাকার ওপর আবগারি শুল্কের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছিল। কোনো ব্যাংক হিসাবে আমানতের পরিমাণ বছরে এক লাখ টাকার বেশি হলেই আবগারি শুল্ক দিতে হয়।
বর্তমানে এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫০ টাকা ও পাঁচ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ পর্যন্ত ৫০০ টাকা আবগারি শুল্ক রয়েছে। বর্তমানে এক লাখ পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবের স্থিতিতে কোনো আবগারি শুল্ক দিতে হয় না।
প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ১০ লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্কের যে স্তরটি রয়েছে, সেটি ভেঙে দুটি স্তর করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ১০ লাখ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত গচ্ছিত টাকায় আগের মতোই তিন হাজার টাকা আবগারি শুল্ক থাকবে। আর ৫০ লাখ টাকা থেকে এক কোটি পর্যন্ত তিন হাজার টাকার পরিবর্তে পাঁচ হাজার টাকা শুল্ক বসবে। আর এক কোটি টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত বিদ্যমান স্তরটিও ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। নতুন অর্থবছরে এক কোটি থেকে দুই কোটি পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা, দুই কোটি থেকে পাঁচ কোটি পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা শুল্ক দিতে হবে। বর্তমানে এক কোটি থেকে পাঁচ কোটি পর্যন্ত আমানতে আবগারি শুল্ক ১৫ হাজার টাকা। ব্যাংক হিসাবে বছরে একবার যদি স্থিতি পাঁচ কোটি টাকা অতিক্রম করে, তাহলে সেই আমানতের ওপর আবগারি শুল্কের পরিমাণ হবে ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে এই স্তরে ৪০ হাজার টাকা দিতে হয়।
প্রসঙ্গত-চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ছিল সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। পরে এটি সংশোধন করে সাত লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা করা হয়।এবারের বাজেট সবচেয়ে বড় আকারের বাজেট। বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চেয়ে এবারের বাজেটের আকার বাড়ছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এটি দেশের ৫৩তম, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৫তম ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট।
এর আগে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের আগে দুপুর ২টার দিকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে তা অনুমোদন করা হয়। ওই প্রস্তাবে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরে সংসদে পাস হয়ে ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।