অস্থায়ীভাবে টিসিবির পণ্যগুলো দিতে চাই না: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ২:৪৪ অপরাহ্ণ, জুন ২, ২০২৪

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন- ‘আমরা আর অস্থায়ীভাবে টিসিবির পণ্যগুলো দিতে চাই না। নতুন অর্থবছরে স্থায়ী দোকানে পণ্য দিতে চাই। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে টিসিবির জন্য পৃথক গুদাম করার পরিকল্পনা রয়েছে। এখন শুধু নিম্নবিত্তদের পণ্য দিতে পারছি। আগামীতে মধ্যবিত্তদের টিসিবির পণ্য দেওয়ার চেষ্টা করব।’

তিনি বলেন- প্রতি মাসেই আমরা সুবিধাভোগীদের হাতে টিসিবির পণ্য তুলে দিতে চাই। এই কর্মযজ্ঞটা অনেক বড়। এ মাসে এটা শুরু করতে পেরে ভালো লাগছে। ঈদের আগে মানুষের হাতে টিসিবির পণ্যটা যেন পৌঁছে যায় এটাই আমাদের উদ্দেশ্য। এক কোটি পরিবার যখন এটা পায় তখন বাজারে চিনি, চালসহ এসব পণ্যের ওপর চাপ কমে। ফলে চাহিদা কমে যাবে, বাজারেও চাপ কমে যাবে।

রোববার (২ জুন) চলতি বছরের জুন মাসের টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা জানান। মেসার্স রেড পুষ্প জেনারেল স্টোরের সহযোগিতায় রাজধানীর মিরপুর-১১ নম্বরের প্যারিস রোডে শেখ ফজলুল হক মনি খেলার মাঠে এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) আঞ্চলিক কার্যালয়।

তিনি আরও বলেন, আগামী অর্থ বছরে আমরা টিসিবির একটি বাফার স্টক তৈরি করার চেষ্টা করব। যাতে বিভিন্ন সময়ে বাজারে পণ্যের ঘাটতি দেখা দিলেও আমরা যেন দামটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। সেই বাফার স্টক থেকে পণ্য সরবরাহ করতে পারি। এজন্য আমরা রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। আরো কয়েকটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করার চেষ্টা করছি। যাতে আমরা সুলভ মূল্যে টিসিবির মাধ্যমে সেসব দেশ থেকে পণ্যগুলো নিয়ে আসতে পারি এবং ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের যদি দোকান স্থায়ী হয়ে যায়, তাহলে আমাদের প্রায় ১০ হাজারের মতো নেটওয়ার্ক তৈরি হবে। এখন আমরা শুধু নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের ন্যায্য মূল্যে পণ্য দিচ্ছি। মধ্যবিত্তদেরও যেন আমরা ন্যায্য মূল্যে পণ্য সরবরাহ করতে পারি, সেই পরিকল্পনা আমাদের আছে।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রতি মাসেই আমাদের চেষ্টা থাকে যত তাড়াতাড়ি টিসিবির পণ্যটি সুবিধাভোগীর হাতে তুলে দিতে পারি। জুন মাসে প্রথম কর্ম দিবসেই টিসিবি এই কার্যক্রমটি শুরু করতে পেরেছে। এজন্য টিসিবির চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাই। এক কোটি পরিবারকে ন্যায্য মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দেওয়ার এই কর্মযজ্ঞটা অনেক বড়। একেকটি পণ্য একেক জায়গা থেকে সংগ্রহ করে ডিলারদের মাধ্যমে সুবিধাভোগীর হাতে পৌঁছে দিতে হয়।

Nagad

তিনি আরো বলেন, সামনে কোরবানির ঈদ। ঈদের আগেই সারা দেশে প্রতিটি সুবিধাভোগীর হাতে টিসিবির এই প্যাকেজটি আমরা তুলে দিতে চাই।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এক কোটি পরিবার যখন এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো পায় তখন চিনি, চাল, ডাল ও তেলের বাজারের চাহিদাও কিছুটা পূরণ হয়। এর মাধ্যমে আমরা যেমন এক কোটি পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে চারটি পণ্য দিচ্ছি, তেমনি বাজারে দ্রব্যমূল্যের চাপও নিয়ন্ত্রণ করছি। এই একটি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দুটি উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে। এতে শুধু সুবিধাভোগী পরিবারই সুবিধা পাচ্ছে না, বাজারের চাপও কমছে।

এই মৌসুমে খুব ভালো ধানের ফলন হয়েছে জানিয়ে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, আমাদের খাদ্য বিভাগ ধান ও চাল সংগ্রহ করছে। আমরা আশা করি, আমরা চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তফা ইকবাল, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক প্রমুখ।

উল্লেখ্য, জুন মাসে টিসিবির মাধ্যমে সারাদেশে এক কোটি সুবিধাভোগী পরিবারকে ৩০ টাকা দরে পাঁচ কেজি চাল, ১০০ টাকা দরে দুই লিটার সয়াবিন তেল, ৬০ টাকা দরে দুই কেজি মশুর ডাল ও ঢাকায় ৭০ টাকা দরে এক কেজি চিনি দেওয়া হবে। প্রতি প্যাকেজের মূল্য ৫৪০ টাকা।