ঘূর্ণিঝড় রেমাল: ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৩৭ লাখ মানুষ, বিধ্বস্ত ৩৫ হাজার ঘরবাড়ি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৬:০৪ অপরাহ্ণ, মে ২৭, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে দমকা হাওয়াসহ ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি বয়ে গেছে দেশের উপকূল অঞ্চলে। দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের এ ধাক্কায় ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এছাড়া বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার ঘরবাড়ি। সঙ্গে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯০০ ঘরবাড়ি-এমনটাই জানিছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান।

সোমবার (২৭ মে) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে খুলনা, সাতক্ষীরা ও পটুয়াখালী জেলাসহ উপকূলীয় ১৯ জেলার ১০৭ উপজেলায় ৯১৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সরকারের প্রস্তুতির কারণে বড় ক্ষয়ক্ষতি হয় নাই। ঘূর্ণিঝড়ে এ পর্যন্ত ১০ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার জন্য ৬ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ টি জেলায় জিআর হিসেবে ৩ কোটি ৮৫ লাখ নগদ টাকা, পাঁচ হাজার পাঁচশ মেট্রিক টন চাল ও পাঁচ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিশুখাদ্য কেনার জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা সহযোগিতা করা হয়েছে। এসব সহযোগিতা ক্ষতিগ্রস্তদের মোবাইল অ্যাকাউন্টে যাবে।

মহিবুর রহমান আরও জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে ৯ হাজার ৪২৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে বা স্থায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৮ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

সোমবার (২৭ মে) দুপুর ১২টা পর্যন্ত বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী ও সাতক্ষীরা এবং চট্টগ্রামে ওই ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে রোববার (২৬ মে) থেকে সোমবার (২৭ মে) দুপুর ১২টা পর্যন্ত বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী ও সাতক্ষীরা এবং চট্টগ্রামে ওই ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

Nagad

তারা হলেন- খুলনার লালচাঁদ মোড়ল, বরিশালের জালাল সিকদার, মো. মোকলেছ, লোকমান হোসেন, সাতক্ষীরার শওকত মোড়ল, পটুয়াখালীর মো. শহীদ, ভোলার জাহাঙ্গীর, মাইশা, মনেজা খাতুন ও চট্টগ্রামের ছাইফুল ইসলাম হৃদয়।

মন্ত্রণালয়ের পাঠানো তালিকায় তাদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বসতঘরের ওপরে গাছ পড়ে, বাজারে যাওয়ার সময় গাছ পড়ে, জলোচ্ছ্বাসে সৃষ্ট পানিতে ডুবে, দেয়াল ভেঙে এবং নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল ধসে তাদের মৃত্যু হয়েছে। আর একজন সাইক্লোন সেন্টারে যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টিপাত হয়। যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় সতর্কবার্তার প্রেক্ষিতে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে নয় হাজার ৪২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে জা‌নি‌য়ে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এসব আশ্রয়কেন্দ্র ও স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আট লাখের বেশি লোক আশ্রয় নিয়েছেন। গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়াসহ আশ্রিত পশুর সংখ্যা ৫২ হাজার ১৪৬টি।