ধর্ম নিয়ে কটূক্তি, জবি শিক্ষার্থীর পাঁচ বছরের কারাদণ্ড
ধর্ম নিয়ে কটূক্তির করা দায়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার (১৩ মে) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ রায় ঘোষণা করেন।


বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন, তিথি সরকারের আগের ২১ মাসের কারাভোগ বর্তমান সাজা থেকে বাদ যাবে। এ ছাড়া তাকে এক বছরের জন্য প্রবেশনে রাখার আদেশ দেওয়া হয়। এ সময় নিয়মিত প্রবেশন কর্মকর্তার কাছে তাকে হাজিরা দিতে হবে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ফেসবুক ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরূপ মন্তব্য করে আসছিলেন তিথি সরকার। পরে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা তিথি সরকারের বহিষ্কার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিথিকে সাময়িক বহিষ্কার করে।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। প্রাণিবিদ্যা বিভাগের এই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও করা হয় সাময়িক বহিষ্কার।
এরপরই তার পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয় যে, তিথি সরকার নিখোঁজ। ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর সকাল ৯টায় পল্লবীর নিজ বাসা থেকে থানার উদ্দেশে বের হয়েছিলেন তিথি সরকার। এরপর ১৫ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। একই বছরের ৩১ অক্টোবর সিআইডির সাইবার মনিটরিং টিম দেখতে পায়, সিআইডির মালিবাগ কার্যালয়ের চারতলা থেকে তিথি সরকারকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বলে একটি মিথ্যা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা হয়।
এ ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। প্রকৃতপক্ষে সিআইডিতে এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে পুলিশের পক্ষ তেকে দাবি করা হয়।
তদন্তে নেমে গুজব রটনাকারী নিরঞ্জন বড়াল নামের একজনকে রামপুরার বনশ্রী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এরপর নিরঞ্জনসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২ নভেম্বর পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়। ২০২১ সালের ১৯ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান এই দুজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন। এরপর চার নভেম্বর তিথি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।