নতুন ঘর পেল প্রতিবন্ধী ভাই-বোন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ৯:৪০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১১, ২০২৪

এবার নতুন ঘরে মাথা গোজার ঠাই মিলল প্রতিবন্ধী দুই ভাই বোনের। জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী লিপি দাস (২৬) ও শিমুল দাস (২২)। তাদের জন্মের পর থেকেই ২০/২৫ বছর বাড়ির উঠানে এক ঝুপড়ির মধ্যে কাটছিল দূর্বিসহ জীবন। তাদের অসহায়ত্বের ওই করুন অবস্থা দেখেই ঝিনাইদহে কালীগঞ্জ ইউএনওর সার্বিক প্রচেষ্টায় করা হয়েছে ওই নতুন ঘরের ঠিকানা।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু, ইউএনও, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সহ এনজিও ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিতি থেকে তাদেরকে ওই ঘরে তোলা হয়। প্রতিবন্ধী ভাই বোন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সিঙ্গি গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন দাসের সন্তান।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান জানান, বেশ কিছুদিন আগে অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণের ছবিতে এক মহিলাকে শুয়ে থেকে খাবার গ্রহণের চিত্র দেখেন। এতে কৌতূহল বশত বিষয়টি জানার আগ্রহ হয়। এর কয়েকদিন পর তিনি সরেজমিনে ওই বাড়িতে যান। সেখানে দেখতে পান বসত ঘরের অভাবে বাড়ীর উঠানে একটি টিনের ছোবড়ার নিচে প্রতিবন্ধী দুই ভাই বোন শুয়ে আছে। বিষয়টি তার মনে বেশ দাগ কাটে। তখনই পরিকল্পনা করেন তাদের জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করার। সে মোতাবেকই তিনি ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা ও কিছু এনজিও প্রতিষ্ঠান সহ সুধী-জনদের আর্থিক সহায়তায় ওই পাকা ঘরের নির্মাণ কাজটি সম্পন্ন করেছেন। তিনি জানান, এতিম দুই প্রতিবন্ধী পরিবারের জন্য আরো সহায়তার চেষ্টা করা হবে।

এনজিও কর্মী সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শিবুপদ বিশ্বাস জানান, ইট ও টিনের তৈরি ঘরটি নির্মাণে প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

ঘর প্রদানকালে প্রতিবন্ধীদের বাড়িতে উপস্থিত তার বড় ভাই হত-দরিদ্র ভ্যান চালক রিপন দাস জানায়, তার দুই ভাই বোন জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। চলাফেরা এমনকি নিজেরা হাত দিয়েও ঠিকমতো খেতে পারে না। তিনি জানান, ১৫ বছর আগে তাদের বাবা ও তারই এক বছর পরই মা মারা গেছেন। সেই থেকেই প্রতিবন্ধী ভাই বোনকে পিতৃ স্নেহে আগলে রেখেছেন তিনি। নিজে ভ্যান গাড়ী চালায়। স্ত্রী অন্যের পান বরজে কামলা খাটে। তাদের দু’জনের আয়ে কোনরকমে চলে সংসার। এখন ঘরের ব্যবস্থা হলেও প্রতিবন্ধী ভাই বোন সহ পরিবারটির ভরনপোষন নিয়েও দুঃচিন্তায় কাটে দিনগুলি।

রিপন দাস আরো জানায়, সংসারে তার স্ত্রী, দুই সন্তান ও প্রতিবন্ধী দুই ভাই বোন নিয়ে ৬ সদস্যর পরিবার। ভিটে বাড়ি ছাড়া মাঠে তাদের কোন জমাজমি নেই। প্রতিবন্ধী দুই ভাই বোনের সরকারী ভাতার কার্ড আছে। কিন্তু সেই ভাতার টাকা দিয়ে মাসের খাবার তো দুরের কথা, ঔষধ কেনার টাকাও থাকে না।

Nagad

এ সময়ে ওই বাড়িতে উপস্থিত কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু বলেন, পরিবারটি অত্যন্ত অসহায়। প্রতিবন্ধী দুই ভাই বোন সহ পরিবারটির জন্য তারা আরো সহযোগিতার ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দেন। এ সময় উপস্থিত কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহানাজ পারভীনও পরিবারটির প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়াতে একমত প্রকাশ করেন।