আগুন দেওয়ার ঘটনায় ফুটেজ দেখে ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৫:৫৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০২৩

ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আবু তালেব মাসুম। সংগৃহীত ছবি

নাশকতা ও আগুন লাগিয়ে সেই ভিডিও দলের অন্য নেতা-কর্মিদের কাছ পাঠাতেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আবু তালেব মাসুম। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন ভিডিও দেখে সম্পৃক্ততা প্রমাণ পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্ঘলা বাহিনী।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) রাতে কক্সবাজার থেকে একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকালে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান-২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ থেকে নাশকতায় সরাসরি অংশ নেয় মাসুম। পরে বিভিন্ন সময়ে মহাসড়ক ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় যানবাহন ভাংচুর ও আগুন দেয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এর ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে তাকে এক সহযোগীসহ কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

খন্দকার আল মঈন বলেন, অপর গ্রেপ্তারকৃত জজ মিয়া মাসুমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। সে মাসুমের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও মহাসড়কে গণপরিবহন, ব্যক্তিগত যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রাস্তা অবরোধ করে নাশকতা ও সহিংসতা চালায়।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার এড়াতে মাসুম কক্সবাজারে আত্মগোপনে চলে যায়। এরপর তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে র‌্যাব-১ ও র‌্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল কক্সবাজারে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে সহযোগীসহ মাসুমকে গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা তাদের দলীয় শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশনায় গ্রেপ্তারকৃত মাসুমের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় সহিংসতা ও নাশকতা চালায়। গ্রেপ্তারকৃত মাসুম গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টন এলাকায় সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকায় আসে। পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃতরা রাজধানীর পল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় গণপরিবহন, ব্যক্তিগত যানবাহনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ, রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে নাশকতা সৃষ্টি করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অপচেষ্টা চালায়। এসময় তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরও হামলা চালায়।

Nagad

পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃতরা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফিরে আসে। গ্রেপ্তারকৃত মাসুম শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রাস্তা অবরোধ করে নাশকতা ও সহিংসতার পরিকল্পনা করে। গ্রেপ্তারকৃত মাসুমের পরিকল্পনা মোতাবেক তার অনুসারীরা লাঠিসোটা হাতে মিছিল করে সোডাউন দিয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতংক ও ত্রাসের সৃষ্টি করে রাস্তা অবরোধ করে গণপরিবহন, ব্যক্তিগত পরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে নাশকতা ও সহিংসতার তান্ডব লীলা চালায়। তারা যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের পর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করে তাদের সমমনা অন্যান্য অনুসারীদের নাশকতা সৃষ্টিতে প্ররোচিত করতো। তাদের দলের নিকট নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি ও দলের প্রতি নিজেদের আস্থার প্রতিদান দিতে তারা এ সকল নাশকতা ও সহিংসতার ভিডিও ধারণ করে তাদের দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের নিকট প্রেরণ করতো বলে জানা যায়।

গ্রেপ্তারকৃত জজ মিয়া গ্রেপ্তারকৃত মাসুমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। সে গ্রেপ্তারকৃত মাসুম এর নির্দেশে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও মহাসড়কে গণপরিবহন, ব্যক্তিগত যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রাস্তা অবরোধ করে নাশকতা ও সহিংসতা চালিয়েছে বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নারায়নগঞ্জ ও রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৪টির অধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।