এমপিকে কারণ দর্শাতে বলা দুই নেতাকে বরিশাল জেলা আ.লীগের শোকজ

বরিশাল সংবাদদাতা:বরিশাল সংবাদদাতা:
প্রকাশিত: ৭:৩০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৭, ২০২৩

(বা থেকে) বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক ও সম্পাদক মাওলাদ হোসেন সানা।

বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমের বিরুদ্ধে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শোকজ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। প্রচলিত দলীয় রীতি লঙ্ঘন করে এ পদক্ষেপ নেওয়ায় অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। এখন কারণ দর্শাতে বলা বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস সাক্ষরিত নোটিশে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস। তিনি জানান, ৭ কার্যদিবসের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ নোটিশের সন্তোষজনক জবাব না দিলে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহে আলম তালুকদারকে বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কারণ দর্শাতে বলেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে না জানিয়ে কোন ক্ষমতাবলে সংসদ সদস্যকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে তা নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বানারীপাড়া-উজিরপুর নিয়ে এ আসন গঠিত। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুই উপজেলার আওয়ামী লীগে শীর্ষ পদধারীরা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর অনুসারী। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে এমপি শাহে আলমের সঙ্গে দু্‌ই উপজেলায় হাসানাত অনুসারী নেতাদের দূরত্ব চলছে। আবুল হাসানাত বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী। হাসানাত অনুসারী স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বিরোধের জেরে গত বছর সেপ্টেম্বরে দলীয় পদ হারান বরিশাল-৪ (মেহেন্দীগঞ্জ-হিজলা) আসনের পঙ্কজ দেবনাথ এমপি। দলীয় পদ হারানোয় রাজনৈতিক সংকটে পড়েন পঙ্কজ। এমপি শাহ আলমকে একই ফাঁদে ফেলার চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত ২৯ আগস্ট বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় শাহে আলমকে শোকজ করার সিদ্ধান্ত হয়। নোটিশে স্বাক্ষর করেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম ফারুক এবং সাধারণ সম্পাদক মাওলাদ হোসেন সানা। ১৫ দিনের মধ্যে এমপিকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

Nagad

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাওলাদ হোসেন সানা। তিনি জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সংসদ সদস্য শাহে আলম তালুকদার এখনো কোনো লিখিত জবাব দেননি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংসদ সদস্য শাহে আলম তালুকদারকে দেওয়া নোটিশের ১৭টি অভিযোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, দলীয় কার্যালয় নির্মাণের দুই লাখ টাকা নিজের জিম্মায় রাখা, উপজেলা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নিজস্ব বলয় তৈরি করা, বানারীপাড়া পৌরসভা, চাখার ও সৈয়দকাঠি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে নিজস্ব লোক দিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী দাড় করানো এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে নিজের চাচাতো ভাইকে প্রার্থী করে প্রভাব খাটিয়ে তাকে জয়ী করা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক ও সম্পাদক মাওলাদ হোসেন সানা সাক্ষরিত ওই নোটিশে উল্লেখ করা ছিল, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব না দিলে শাহে আলম তালুকদারের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।