মার্কিন প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বলল বিএনপি
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বমানের নির্বাচন সম্ভব নয় বলে ঢাকায় সফররত মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলকে জানিয়েছে বিএনপি। বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন শুধু দেশের মধ্যেই প্রশ্নবিদ্ধ নয়, সারা বিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ। দেশের মানুষ যেভাবে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, তেমনি বিশ্বও একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।
তিনি বলেছে, দেশে কোনো নির্বাচনের পরিবেশ নেই। যেটা বলেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা বলেছে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। এখন মার্কিন এই প্রতিনিধিদল একই বিষয় নিয়ে কাজ করতে এসেছে।


আজ সোমবার (৯ অক্টোবর) মার্কিন প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে আমীর খসরু এ কথা বলেন।
এর আগে সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় গুলশানে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সঙ্গে ছিলেন—স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকে আসাদুজ্জামন আসাদ।
মার্কিন প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলে এনডিআই প্রতিনিধি হিসেবে বৈঠকে অংশ নেন-রিক ইন্ডারফোর্থ, মারিয়া চিন আবদুল্লাহ ও মনপ্রীত সিং আনন্দ এবং আইআরআই প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন, বনি গ্লিক, জামিল জাফর এবং জো কাও।
আমীর খসরু আরও বলেন, বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোও বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক একটা নির্বাচন দেখতে চায়। সেই প্রেক্ষাপটে আপনারা দেখেছেন এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এসেছিল এবং সবার সঙ্গে কথা বলে গেছেন। সেখানে ফিরে গিয়ে তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশে তারা পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। কারণ, বাংলাদেশের নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই।
বিএনপি এই নেতা বলেন, এখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডেলিগেশন আসছে। একটি উদ্দেশ্য নিয়ে তারা বাংলাদেশের নির্বাচনের যে পরিবেশ, সেটা পর্যবেক্ষণ করতে এসেছে। আগামী দিনের সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি না। তারা এর আগেও কথা বলেছে, আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে, এরপরে আরও অন্যদের সঙ্গে কথা বলবে। ঘুরেফিরে কথা একটিই, নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক মানের বিশ্বাসযোগ্য বাংলাদেশে হবে কি না। হতে হলে সেটিতে কি প্রয়োজন এবং সেটি কীভাবে করা যায়।
তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকার বিএনপির একার দাবি না, এটা বাংলাদেশের মানুষের দাবি। নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া তারা যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না, এ বিষয়ে বাংলাদেশের জনগণের মনে কোনো সন্দেহ নেই। এমন প্রেক্ষাপটে আমরা নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলছি। আপনার যদি তাদের কথাগুলো শুনেন তাহলে দেখবেন, তারা বলছে গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ, আন্তর্জাতিক মানের, বিশ্বাসযোগ্য, অংশীদারিত্বমূলক নির্বাচনের কথা। বর্তমান শেখ হাসিনা সরকারের অধীনের নির্বাচন হলে তারা যেগুলো বলছে, এগুলো হবে না। সুতরাং তারা তো স্বাভাবিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলতে পারে না। এই দাবি উঠেছে বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে।
উল্লেখ্য, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সরেজমিনে যাচাই করতে ৭ অক্টোবর ঢাকায় আসে প্রতিনিধিদলটি। আগামী ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) যৌথভাবে প্রাক-নির্বাচন সমীক্ষা মিশন পরিচালনা করবে।