‘স্টুডেন্ট ভিসায় নারীদের আফগান ছাড়ার অনুমতি নেই’
সম্প্রতি আরব আমিরাতের দুবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য ধনকুবের ব্যবসায়ী শেখ খালাফ আহমদ আল হাবতুর স্কলারশিপ পেয়েছিলেন ১০০ আফগান নারী শিক্ষার্থী। উচ্চ শিক্ষার জন্য আফগান নারী শিক্ষার্থীরা বিমানবন্দরে গেলে তাদের আটকে দিয়েছে কর্মকর্তারা। তারা বলছে, “স্টুডেন্ট ভিসায় নারীদের আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি নেই।”
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এই খরব জানানো হয়েছে।


ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তালেবান সরকার নারীদের উচ্চ শিক্ষা বন্ধ ঘোষণার পর আফগান মেয়েদের এই বৃত্তি প্রদান করা হয়েছিল। এই বৃত্তির অধীনে বিদেশে থাকা কিছু আফগান শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে দুবাইতে পড়তে এসেছেন।
দুবাই ইউনিভার্সিটি এবং আল হাবতুর আফগান মেয়েদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আল হাবতুর এক্স-এ (টুইটার) ইংরেজিতে একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেছেন। এতে তিনি তালেবান কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করে বলেন, ইসলামে নারী-পুরুষ সমান। ভিডিওটিতে বিমানবন্দরে আটকানো আফগান তরুণীর ইংরেজিতে একটি ভয়েস নোটও রয়েছে।
২০ বছর বয়সী আফগান নারী শিক্ষার্থী নাটকাই (ছদ্মনাম) দুবাইতে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। গত ২৩ জুলাই তিনি বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন দেশ ত্যাগের উদ্দেশে। কিন্তু তাকে সেদিন সেখানেই আটকে দেওয়া হয়।
বিবিসিকে তিনি বলেন, “তালেবান নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করার পর, আমার একমাত্র আশা ছিল একটি বৃত্তি পাওয়া যার মাধ্যমে আমি বিদেশে পড়তে যেতে পারব।” কিন্তু তার আশা ভেঙ্গে গেল।
যখন তিনি বিমানবন্দরে যান তখন তালেবান কর্মকর্তারা টিকিট এবং স্টুডেন্ট ভিসা দেখে বলেছিল, মেয়েদের স্টুডেন্ট ভিসায় আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি নেই। তার মতো অন্তত আরও ৬০ জন মেয়েকে সেদিন বিমান বন্দর থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
তালেবান মহিলাদের একক ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে। তারা শুধু তাদের স্বামী বা মাহরাম অর্থাৎ ভাই, চাচা বা বাবার সাথে বিদেশ যেতে পারবে। কিন্তু মাহরাম থাকার পরেও কর্তৃপক্ষ মেয়েদের বিমান থেকে নামিয়ে দিয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর হেদার বার বলেন, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং উদ্বেগজনক পদক্ষেপ যা তালেবানরা ইতিমধ্যেই মেয়েদের এবং নারী শিক্ষাকে অস্বীকার করে নিষ্ঠুরতার সীমার বাইরে চলে গেছে। তাদের বন্দী করে রাখা হচ্ছে যেন অন্যরা তাদের পড়াশোনা করতে সাহায্য করতে না পারে।”
তালেবান মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাদিক আকিফ মুহাজির বিবিসিকে বলেন, তারা এই ঘটনার বিষয়ে অবগত নন। তালেবানের একজন সিনিয়র মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
সারাদিন/২৯ আগস্ট/এমবি