এআই আসলেও ভীত হওয়ার কোনো কারণ নেই, বিপিও সমাপনীতে মন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ১১:২৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০২৩

বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং খাতের বহুমুখীকরণ এবং স্মার্ট কর্মসংসস্থানের পথ দেখিয়ে দেশেজুড়ে অর্ধলক্ষাধিক অংশগ্রহণকারীর মধ্য দিয়ে আজ রোববার (২৩ জুলাই) শেষ হলো দুই দিনের বাংলাদেশ বিপিও সম্মেলন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, এআই আসলেও ভীত হওয়ার কোনো কারণ নেই। যে রোবট কাজ করবে তা আমাদেরই দেশের মানষুরাই তৈরি করবে। প্রযুক্তি মানুষের কাজ বিলুপ্ত করবে, তা হবে না। এছাড়াও স্মার্ট বাংলাদেশের অন্যতম অনুষঙ্গ ডিজিটাল সংযোগ উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, যে কোনে গ্রামে সংযোগ দিতে তার মন্ত্রণালয় প্রস্তুত। দক্ষ মানুষও এখন তৈরি করছে সরকার।

রোববার (২৩ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটলে বক্কো’র উদ্যোগে ‘সোর্সিং বিয়ন্ড বর্ডার্স’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত পঞ্চম বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) সামিটের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আমাদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত মানব সম্পদ তৈরির উপর-জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিপিও সেক্টরে কাজ করতে অতি উচ্চতর প্রযুক্তি জ্ঞানের দরকার নেই। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা এখনো রয়ে গেছে-আমরা শিক্ষিত লোকদের চাকরির ব্যবস্তা আমরা এখনো করতে পারি না। শিক্ষাক্ষেত্রে যে জ্ঞানটা দেয় না; সে জ্ঞানাটা যদি বিপিও সেক্টর দেয়, তাহলে আমাদের মানুষের আর কোনো অভাব হবে না।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, যখনই কন্টাক্ট সেন্টার, আউটসোর্সিং নিয়ে আমাদের কথা হয়-তখনই কিন্তু আমাদের সবার মনে প্রথমে যে কথাটি ভেসে উঠে; সেটি হলো ৯৯৯। কারণ যেকোনো প্রয়োজনে, জীবন রক্ষায়- এই একটি নাম্বার আমাদেরকে দেশের ১৭কোটি মানুষকে সেবা প্রধান করছে।

বাক্কোর কর্মসংস্থান তৈরিতে, রপ্তানি আয় বাড়াতে তাদের লক্ষ্য পূরণে আমাদের আইসিটি ডিভিশন থেকে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

Nagad

রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল-এর রূপসী বাংলায় অনুষ্ঠিত জাতীয় সম্মেলনের বাইরে ১৫টি স্টলে নিজেদের সেবা তুলে ধরার পাশাপাশি ফ্রেশ গ্র্যাজ্যুয়েটদের সিভি গ্রহণ করে বাক্কো সদস্যভূক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো। ৯টি সেমিনারে উঠে আসে প্রান্ত থেকে বিশ্ব জয়ের অন্যতম খাত হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের বিপিও খাতকে ছড়িয়ে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত হলো সমাপনীতে।

অনুষ্ঠানে বাক্কো সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন জানান, জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ঢাকার ৯টিসহ দেশজুড়ে বিভাগীয় পর্যায়ের মোট সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় ১৬টি। এছাড়াও ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তরুণদের জন্য অনুষ্ঠিত হয় কর্মশালা। এছাড়াও গত মে থেকে শুরু হওয়া বিপিও সামিটে মোট ৮০০০ এর বেশি সিভি জমা পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সামিটে অংশগ্রহণ করে প্রায় ৬০ লক্ষ নেটিজেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে যখন উন্নত দেশে খরচ বেশি হয়ে যায়; তখন আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশ থেকে পণ্য বা সেবাগুলো নিয়ে থাকে। সেবা খাতেও ইউরোপ আমেরিকায় যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে; সেখানে আমি মনে করি বাংলাদেশ একটি যোগ্য দেশ, যোগ্য অবস্থানে আছে।

দক্ষ জনশক্তির কারণে ইউরোপের সেবা খাতে যে সুযোগ তৈরি হয়েছে সেই সম্ভাবনা আমরা কাজে লাগাতে পারছি না জানিয়ে সচিব বলেন, আমাদের অন্যতম সমস্যা হচ্ছে-আমাদের যোগ্য জনশক্তির অভাব। এগিয়ে নিতে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সম্প্রসারণে পলিসিগত দিক থেকে সকল সহায়তা প্রদান করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিপিও লাইসেন্স পেতে ২২টি ফর্ম পূরণ করার প্রতিবন্ধকতা দূর করতে লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রেও অনলাইন পোর্টাল চালু করা হবে বলে জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার। তিনি বলেন, সুন্দর একটি অনলাইন আমরা তৈরি করছি; অনলাইনেই বিটিআরসির লাইসেন্স আবেদন করবে, অনলাইনেই লাইসেন্স পেয়ে যাবে। বিপিও লাইসেন্স পেতেও এত কাগজপত্রের দরকার নেই।

তিনি বলেন, নারীদের কর্মী সংস্থানে কল সেন্টারগুলো বড় ক্ষেত্র তৈরি করছে। আমি জেনে অভিভূত হয়েছি, কোনো কোনো বিপিও-তে ৬০ শতাংশেরর বেশি কর্মী নারী। এখন আমাদের সবাইকে মিলে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করতে হবে। আমরা কিন্তু ৫জি চালু করেছি, বাণিজ্যিকভাবে এখনো যায়নি। তবে আমাদের মোবাইল কোম্পানিগুলো তৈরি আছে।

অংশগ্রহণকারী ও অংশীজনদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অনুষ্ঠানের সমাপনী ঘোষণা করেন বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)-এর উদ্যোগে পুরো আয়োজনে সহযোগী হিসেবে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর ও বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিল। এবারের সম্মেলনকে সামনে রেখে প্রথমবারের মতো রাজধানী ঢাকার বাইরের প্রতিটি বিভাগেই দুই দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিভাগীয় সম্মেলন। এরমধ্যে রাজশাহী বিভাগের সম্মেলন হয়েছিলো নাটোর জেলায় এবং খুলনা বিভাগের সামিট হয়েছিলো যশোর জেলায়।

সারাদিন. ২৩ জুলাই